বাংলাদেশ

ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭৮

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সারাদেশে ৫৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৫৭৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ৩২৭ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৭৮ ও শিশু ৮৭টি।

আজ শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে  বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।  ফাউন্ডেশনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে বলা হয়- মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ২২৭ জন, বাসের যাত্রী ৩৩ জন,  ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-ড্রাম ট্রাক আরোহী ৫৬ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ২২ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ৯২ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম-এস্কেভেটর) ২০ জন এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২০৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৯৮ জন নিহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় ৪১টি দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম মৌলভীবাজার জেলায়। এই জেলায় কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি। এ ছাড়া ঢাকায় ৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত এবং ৩৬ জন আহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, ফেব্রুয়ারিতে দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২০৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৬৮টি আঞ্চলিক সড়কে, ৭৩টি গ্রামীণ সড়কে, ৪৬টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। এ সময় দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৯৩৮টি।

ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

 

সড়ক দুর্ঘটনারোধে কিছু সুপারিশ করেছে ফাউন্ডেশনটি। সেগুলো হলো-

দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; 

চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; 

বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; 

পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে;

মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে;

পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; 

গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; 

রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; 

টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

ওয়াইএএস

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন