উঁচু দাঁতের কারণে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন দার্শিল সাফারি

‘তারে জামিন পার’ সিনেমার সেই ছোট্ট ঈশান এখন আর ছোট্ট নেই। ২০০৭ সালে আমির খানের বিপরীতে অভিনয় করে সবার মনে স্থান পাওয়া দার্শিল সাফারি আজ ২৮ বছরে পা দিলেন। তবে ঈশান চরিত্রের জন্য তিনি যে সুযোগ পেয়েছিলেন, তা পুরোপুরি এক কাকতালীয় ঘটনা ছিল।
স্কুল পড়ুয়া একটি ছেলে ছিলেন দার্শিল সাফারি, যিনি একদিন তাঁর নাচের ক্লাসে একটি পোস্টার দেখেন, যেখানে লেখা ছিল—“দুষ্টু একটি শিশুকে খুঁজছি, যদি তুমি সিলেক্ট হও, তাহলে আমির খানের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পাবে।” সেদিনই প্রথম তাঁর মনে অভিনয়ের ইচ্ছে জাগে। এরপর, তাঁদের নাচের ক্লাসে আসেন অমল গুপ্ত, যিনি ‘তারে জামিন পার’ সিনেমার ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ছিলেন। দার্শিলকে দেখে তিনি তাঁকে অডিশনে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
দার্শিল সাফারির উঁচুনিচু এবড়োখেবড়ো দাঁত নিয়েও স্কুলে তাকে নানা ধরণের বিদ্রূপের শিকার হতে হয়েছিল। কিন্তু আজ তিনি নিজেই বলেন, “এই দাঁতের জন্যই আমি ‘তারে জামিন পার’-এ অভিনয়ের সুযোগ পাই।" তাঁর বন্ধুদের কাছে হাসির খোরাক হলেও, সেই দাঁতই তাঁকে সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ এনে দিয়েছিল।
‘তারে জামিন পার’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শুটিংয়ের সময় দার্শিলের স্কুলে উপস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এই সমস্যা সমাধানে আমির খান নিজেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে নিশ্চিত করেছিলেন, শুটিংয়ের কারণে তাঁর পড়াশোনায় কোনো বাধা আসবে না,বরং পড়াশোনা ঠিকভাবেই চলবে। এমনকি আমির খান দার্শিলের পড়াশোনার খরচও নিজে বহন করেন এবং শুটিংয়ের মাঝে তাঁর জন্য আলাদা শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেন।
‘তারে জামিন পার’-এর পর দার্শিল সাফারি ২০০৭ সালে আমির খানের কাছ থেকে একটি গেম বক্স উপহার পেয়েছিলেন, যা তিনি আজও যত্ন করে রেখেছেন। এরপর, বেশ কয়েক বছর পর, একটি কোমল পানীয়ের বিজ্ঞাপনে আমির খান এবং দার্শিল আবার একসাথে কাজ করেন, যেখানে তারা নানা-নাতির চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
তবে, ‘তারে জামিন পার’-এর পর দার্শিল সেভাবে আলোচনায় আসেননি। যদিও তিনি কিছু সিনেমা ও সিরিজে কাজ করেছেন, তবুও তারকার তালিকায় তাঁর অবস্থান সেভাবে দৃঢ় হয়নি। তারপরও, তিনি জানিয়েছেন, অভিনয়ই তার পেশা এবং ভবিষ্যতে তিনি কাজ চালিয়ে যেতে চান।
অভিনয় জগতে আমির খানকে তিনি একজন কালজয়ী অভিনেতা হিসেবে মনে করেন, তবে তার নিজের পছন্দের তারকা হৃতিক রোশন।
তার ২৮ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে, দার্শিল সাফারি ‘তারে জামিন পার’-এর ঈশান চরিত্রটি আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। তাঁর উঁচু দাঁত, যা কখনো তার জন্য হাসির পাত্র ছিল, সেই দাঁতই তাকে এনে দিয়েছে সাফল্যের চূড়া।
এসকে//