দেশজুড়ে

কুকুর দিয়ে কামড়ানোর ভয় দেখিয়ে সাত বছরের শিশুকে ৩ বার ধর্ষণ

কুকুর দিয়ে কামড়ানোর ভয় দেখিয়ে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। শনিবার(০৮ মার্চ) দিবাগত রাতে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ভুশ্চি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত বৃদ্ধ আবাদ উল্লাহর বাড়িও একই গ্রামে।

এদিকে ধর্ষণের এই অভিযোগ মীমাংসা করতে শনিবার রাত ১০টায় শিশুটির বাড়িতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি।

বৈঠকে উভয় পক্ষের সদস্যদের দ্বারা গঠিত কথিত জুরি বোর্ডের মাধ্যমে বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃদ্ধের পক্ষে দুই হাজার টাকা সালিশের সভাপতির কাছে জমা দিয়ে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। কিন্তু রাত ২টার দিকে যৌথবাহিনীর একটি টিম বৈঠকস্থলে পৌঁছলে সালিশদাররা পালিয়ে যান। সেখান থেকে শিশুটির মুখে ধর্ষণের বর্ণনা শুনে বৃদ্ধ আবাদ উল্লাহকে আটক করা হয়।

রোববার (০৯ মার্চ) দুপুরে নির্যাতিত শিশুটির মা বাদী হয়ে আবাদ উল্লাহর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, নির্যাতিত শিশুটি স্থানীয় একটি মহিলা মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। গেলো ২৭ ফেব্রুয়ারি মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভুশ্চি গ্রামের হিরন মিয়ার পরিত্যক্ত রান্নাঘরে শিশুটিকে কুকুর দিয়ে কামড়ানোর ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন বৃদ্ধ আবাদ উল্লাহ।

১০ দিনের ব্যবধানে একইভাবে শিশুটিকে তিনি তিনবার ধর্ষণ করেন। গেলো ৭ মার্চ দুপুরে বাড়ির অন্য শিশুদের মাধ্যমে জানতে পেরে তার মা জিজ্ঞাসা করলে শিশুটি ধর্ষণের বর্ণনা দেয়।

শিশুটির চাচা বলেন, নির্যাতিত শিশুটির ধর্ষণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতব্বররা বৃদ্ধ আবাদ উল্লাহকে সালিশ বৈঠকে নিয়ে আসতে বললে শনিবার রাত ১০টায় গ্রামের কয়েকজন ছেলে তাকে একটি চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসে। বৈঠকে বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তার পক্ষে দুই হাজার টাকা জমা করে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। খবর পেয়ে রাত ২টায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলে সালিশ বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশও আসে। অভিযোগের বর্ণনা শুনে তারা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মন্তাজ ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে ও আবদুস ছোবহানের পরিচালনায় সালিশে বৃদ্ধের পক্ষে জুরি ছিলেন ফজলুর রহমান মিন্টু ও জাকির হোসেন। আর শিশুটির পক্ষে ছিলেন আবদুল মালেক ও মানিক মিয়া। গ্রামের অন্য গণ্যমান্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক রেদোয়ান হোসেন বলেন, “লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম যাওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের কথা শুনে আমরা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। আমরা যাওয়ার আগে বাড়ির উঠানে সালিশ বৈঠক চলছিল বলে শুনেছি।”

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, ‘সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন। ভিকটিমকে মেডিকেল চেকআপের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন