আজ উখিয়ায় লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারে মতো কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সঙ্গে থাকবেন ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। কক্সবাজার বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক। কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে লাখো রোহিঙ্গার সাথে ইফতারে যোগ দেবেন।
এরপর কক্সবাজার থেকে জাতিসংঘ মহাসচিবকে নেয়া হবে উখিয়ার ক্যাম্পে। অন্যদিকে আজ বিকেলে হেলিকপ্টারযোগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছাবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এরআগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চার দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব তার রমজান মাসের সংহতি প্রকাশের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন।’
তিনি বলেন, এই সফরকালে রোহিঙ্গা সংকট এবং এর সমাধানে বাংলাদেশের সাথে জাতিসংঘের সহযোগিতা, সেই সাথে অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শুক্রবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান সকাল ৯ টায় হোটেলে গুতেরেসের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
পরে জাতিসংঘ প্রধান সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। বৈঠকের পর গুতেরেস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য কক্সবাজার যাবেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক কক্সবাজার বিমানবন্দরে গুতেরেসকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
দুই নেতা অনুষ্ঠান চলাকালীন রোহিঙ্গা, ইমাম এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে মতবিনিময় করবেন।
ইফতারের আগে, মহাসচিব ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবেন, যার মধ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টি-পারপাস সার্ভিস সেন্টার এবং একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা।
শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করবেন, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সাথে একটি সভায় যোগ দেবেন।
বিকেলে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন।
তিনি যুব সমাজের সাথে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পরে গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদের সাথে একটি যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস একই দিনে জাতিসংঘ প্রধানের সম্মানে ইফতার এবং নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
রোববার সকাল ৯ টা ৫৫ মিনিটে গুতেরেস এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন। বিমানবন্দরে ড. খলিলুর রহমান তাকে বিদায় জানাবেন।
এই সফরকালে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো দেশটি যে সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তা তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জেএইচ