২৮৬ দিন পর পৃথিবীতে ফিরলেন বুচ-সুনীতা

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) দীর্ঘ ৯ মাস কাটানোর পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন দুই মার্কিন নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনীতা উইলিয়ামস। নাসা ও স্পেসএক্সের যৌথ ‘ক্রু-৯ মিশন’ পরিচালনার মাধ্যমে তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গেলো বছরের ৬ জুন মাত্র এক সপ্তাহের মিশনে মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন বুচ ও সুনীতা। তবে তাদের বহনকারী বোয়িংয়ের তৈরি ‘স্টারলাইনার’ ক্যাপসুলে ত্রুটি দেখা দেয়ায় নির্ধারিত সময়ে তারা ফিরতে পারেননি। দীর্ঘ পরিকল্পনার পর নাসা তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নেয়।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ৯টা ০৫ মিনিটে স্পেসএক্সের ‘ক্রু ড্রাগন’ মহাকাশযানটি লক করা হয়। এরপর নভোচারীরা ফ্লাইটের পোশাক পরিধান করে নিরাপত্তা পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। বেলা ১১টা ০৫ মিনিটে তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বিচ্ছিন্ন হন।
প্রায় ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শেষে বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৭ মিনিটে ক্যাপসুলটি পৃথিবীর আকাশমণ্ডলে প্রবেশ করে এবং বিশেষ প্যারাসুটের সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূল থেকে প্রায় ৫০ মাইল দূরে সমুদ্রে নিরাপদে অবতরণ করে। কিছুক্ষণ সমুদ্রে ভেসে থাকার পর মার্কিন নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ তাদের উদ্ধার করে।
এই সফল অভিযানের পর নাসার নভোচারী ও ‘ক্রু-৯ মিশন’ কমান্ডার নিক হেগ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কী অসাধারণ যাত্রা!’
বুচ ও সুনিতা দুজনই নাসার অভিজ্ঞ নভোচারী এবং মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট। তাদের এই দীর্ঘ যাত্রা ও মহাকাশ গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম।
বুচ ও সুনিতার প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক দাবি করেছিলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাজনৈতিক কারণে এই দুই নভোচারীকে মহাকাশে ফেলে রেখেছিলেন। যদিও এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ফ্লোরিডা উপকূল থেকে উদ্ধারকারী দল তাদের নিয়ে টেক্সাসের জনসন স্পেস সেন্টারে রওনা দেয়। সেখানে তারা কয়েকদিন ‘ক্রু কোয়ার্টারে’ থাকবেন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করবেন। নাসার ফ্লাইট সার্জনের অনুমোদনের পর তারা পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন।
নাসার উপ সহযোগী প্রশাসক জোয়েল মনটালবানো এবং কার্যক্রম সমন্বয় ব্যবস্থাপক বিল স্পিচ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই মহাকাশচারীরা আমাদের গর্ব। তারা ৯ মাসে ৯০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে প্রায় ১৫০টি গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’
এসি//