প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে একাধিক পদ্ধতি দরকার : ইসি সানাউল্লাহ

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে একাধিক পদ্ধতি দরকার। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের যেকোনো পরিসরেই হোক না কেন তাদের ভোটের আওতায় আনা হবে। বললেন নির্বাচন কশিনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইসি সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা ১৭৮টি দেশ বিশ্লেষণ করে দেখেছি । তার মধ্যে ১১৫টি দেশে প্রবাসী নাগরিকদের জন্য ভোট দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়ার কথা বলেছেন । নির্বাচন কমিশনও এই প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনতে তিনটি পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ভোটিং, এবং প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতি বিবেচনা করা হচ্ছে।
সানাউল্লাহ বলেন, প্রবাসীদের ভোটের জন্য কোনো একক পদ্ধতি নয় বরং, মিশ্র পদ্ধতির দিকে যেতে হবে । কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী ভোটিংয়ের জন্য আলাদা পরিস্থিতি রয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রবাসীদের প্রথমে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে । কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করার আগে তার সফলতা ও দুর্বলতা যাচাই করার জন্য মক টেস্টিং করা হবে।
তিনি বলেন, প্রক্সি ভোটের বিষয়টি এখনো কমিশনের মূল অবস্থান। যদি বড় পরিসরে প্রবাসীদের ভোট করতে চাই তবে প্রক্সি ভোটই একমাত্র উপায়। পৃথিবীতে ২৫টির মতো দেশ প্রক্সি ভোট করেছে। ডিজেবল বা হসপিটালে আছে, গর্ভবতী, শিক্ষার্থী, ফোর্সেসদের জন্য, কারাগারের জন্য, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতরা, বিদেশে অবস্থান করছে ডিপ্লোম্যাটদের জন্য প্রক্সি ভোট করছে। তবে কিছু কিছু দেশ সবার জন্য প্রক্সি ভোটের ব্যবস্থা করছে। নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ইউকে সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছে। আর অন্যরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেখেছে। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে চাইলে সব পদ্ধতিতেই সীমাবদ্ধতা আছে। তবে আমাদের সেই সীমাবদ্ধতা কমিয়ে আনতে হবে এবং অন্য পদ্ধতিগুলোর সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
নির্বাচন কমিশনার আরও জানান, পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে একটি অ্যাডভাইজরি টিম গঠন করা হবে। যারা তিনটি পদ্ধতির সফলতা ও দুর্বলতা পর্যালোচনা করবে। কর্মশালায় উঠে আসা পদ্ধতিগুলোর সমাধানেও বিশেষজ্ঞদের কাজ চলবে।
তিনি বলেন, সিস্টেম উন্নয়ন সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নির্ধারণ করা সম্ভব নয় কতটুকু সময় লাগবে। তবে এরপর আমরা সময়সীমা নির্ধারণ করতে পারব। সংস্কার কমিশন পোস্টাল ও অনলাইন পদ্ধতির সুপারিশ করেছে এবং তারা ট্রায়াল পর্যায়ে আটটি ধাপ সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে। বর্তমানে ট্রায়াল কতদিন চলবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়, এবং এই বিষয়ে সঠিক সময়সীমা নির্ধারণ করবেন কারিগরি বিশেষজ্ঞরা।
তবে আমরা যেকোনো পদ্ধতিই প্রবর্তন করি না কেন, তা বাস্তবতার নিরিখে কাস্টমাইজ করা হবে। অ্যাডভাইজরি কমিটি কী পরামর্শ দেয় সেটা আগে দেখি। আমাদের উদ্দেশ্য তিন স্তরে মক ভোট করা এবং তারপরে নির্বাচন করা। পৃথিবীর সব দেশ জাতীয় নির্বাচনে রেখেছে। আমরা আগে জাতীয় নির্বাচনে করি। তারপর স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে বলতে পারব। যেখানে প্রবাসীরা একটা ভোটও দিতে পারে না। সেখানে আমরা এমন পদ্ধতি আনব না, যেখানে প্রবাসীরা হোঁচট খায়।তবে সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ।"
এসকে//