দেশজুড়ে

মৃত্যুর দুই বছর পর অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন পেলেন জামাল

দুই বছর আগে মারা যাওয়া অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনকে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটের মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করা হয়েছে। তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। এই ঘটনায় কুড়িগ্রাম জেলায় নানা আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন গত বছরের ১৫ মার্চ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার (২৪) বাবা।

মঙ্গলবার ০৮ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি/পদায়ন করা হয়। ওই তালিকায় তিনি ১৩ নম্বর সিরিয়ালে রয়েছেন। 

এতে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনকে অধ্যাপক পদ থেকে মাউশি অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় সরকা‌রি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজারহাট সরকা‌রি মীর ইসমাইল হো‌সেন ডি‌গ্রি ক‌লে‌জের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.টি.এম শওকত আকবর ব‌লেন, গত বছ‌রের ৩১ ডিসেম্বর ক‌লেজ অধ্যক্ষ আ ন ম আজিজুর রহমান অবস‌রে যাওয়ার পর চল‌তি বছ‌রের ১ জানুয়ারি থে‌কে ভারপ্রাপ্ত অধ‌্যক্ষ হি‌সে‌বে দা‌য়িত্ব গ্রহণ ক‌রে আসছি। মাউশিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়েছে। অধ্যক্ষ নিয়োগ হ‌লে আমি পূ‌র্বের প‌দে বহাল থাকব। তিনি বলেন, মঙ্গলবার থেকে মৃত ব্যক্তির পদায়‌নের বিষয়‌টি শুনেছি। সেভাবে আমার জানা নেই।

পদায়ন পাওয়া সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনের স্ত্রী তাহমিনা শবনম জানান, ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর রাম দার কোপে আমার স্বামীর বাম হাত ও পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলে। এছাড়াও তিনি হার্টের রোগী ছিলেন। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল তিনি মারা যান। ২০২৩ সালের মে মাসের দিকে সরকারি গোয়েন্দা শাখার লোকজন আমার কাছে তার পদায়নের বিষয়ে যোগাযোগ করলে আমি তাদের জানিয়েছিলাম যে আমার স্বামী মারা গেছেন। এছাড়াও আমি আমার স্বামীর পেনশনের টাকাও উত্তোলন করেছি। এতো দিন পর মাউশি তাকে পদায়ন করলো। পদায়ন হলে তার অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। হয়তো ভুল হতে পারে।

অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। তিনি একাধিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল ৫৩ বছর বয়সে মারা যান।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, `এটি মন্ত্রণালয়ের ভুল হতে পারে। অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মৃত্যুর আগে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে কর্মরত ছিলেন। ২০২৩ সালে তিনি মারা যান।‘

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন