প্রযোজকরা নতুনদের নিয়ে কাজ করতে ভয় পান : স্বস্তিকা

বাংলা সিনেমার অন্যতম পরিচিত এবং মেধাবী অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় । সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তার নতুন সিনেমা দুর্গাপুর জাংশন নিয়ে অভিনয়ের মানে , নতুনদের জায়গা ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। সেই সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা তার কাজ, চিন্তা-ভাবনা এবং বর্তমান সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে অনেক অজানা তথ্য শেয়ার করেছেন।
স্বস্তিকা জানান, এই সিনেমা তার জন্য বিশেষ। এখানে তিনি মা বা মাতৃত্বের চরিত্রে অভিনয় করেননি, যেটি তিনি আগের বেশ কিছু ছবিতে করেছেন। এই সিনেমার গল্প একেবারে ভিন্ন । ওষুধের কারণে মানুষ মারা যাচ্ছে, আর এই ঘটনা শহরতলিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন , এই ছবির গল্পে নতুনত্ব রয়েছে , আর আমি জানি না বাংলায় এরকম থ্রিলার আগে তৈরি হয়েছে কি না।
অভিনেত্রী আরও বলেন , তিনি আর এককভাবে সাক্ষাৎকার দেবেন না। তিনি শুধু ছবির জন্য কথা বলবেন। সাক্ষাৎকারে কেন ব্যক্তিগত অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন , সাক্ষাৎকার দিতে দিতে একটা সময় বিষয়টা একঘেয়ে হয়ে যায় সাথে সংবাদমাধ্যমের ওপরও চাপ পড়ে।
স্বস্তিকা স্পষ্টভাবে বলেন , বাংলা সিনেমার প্রযোজকরা নতুনদের নিয়ে কাজ করতে ভয় পান । তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, অনির্বাণ মাইতি একবার ফেসবুকে লিখেছিল , অনেক অল্প বয়সের অভিনেতা যারা কাজের সুযোগ পেতে চায় , তারা কি কাজ পাচ্ছে ? না পাচ্ছে না , তারা তো না খেয়ে মরবে। তিনি আরও জানান , নতুনরা অডিশন দিতে ইচ্ছুক নয় , তাদের জন্য সিনেমার প্রযোজকরা সময় নষ্ট করতে চান না। স্বস্তিকার মতে যাদের এত দেমাক , তারা কীভাবে শিখবে?
পুরনো শিল্পীদের কাজের মূল্যায়ন নিয়ে তিনি বলেন , বাঁচা গিয়েছে। পুরনো শিল্পীদের কাজ দেখে মনে হয় , আমি ৮০ বছর বয়সেও কোনও না কোনও চরিত্র পাব। তবে তিনি প্রকাশ করেছেন যে , নতুনদের জন্য এ ধরনের সুযোগ দিন দিন কমে যাচ্ছে।
অভিনেতা বিক্রমের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে স্বস্তিকা বলেন , বিক্রম এখন আরও পরিণত এবং নিজেকে এক ভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। ও ছাড়া আর কেউ ওই কাজটা করতে পারত না। আবার টোটা রায়চৌধুরী সম্পর্কে তিনি বলেন , ওর জায়গায় কে ? কেউ নেই। এই শিল্পী যেভাবে কাজ করছে , তা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দাঁড় করায়।
বাংলা সিনেমা সম্পর্কে স্বস্তিকা বলেন , আজকাল মানুষ বেশি জটিল গল্প বা থ্রিলার দেখতে চায় , তবে সৃজিত মুখোপাধ্যায় প্রেমের গল্প নিয়ে সিনেমা তৈরি করুক তিনি চান। আমি সৃজিতকে বলেছি , প্রেমের গল্পে সিনেমা বানাতে। সৃজিত প্রেমে পড়ে গান লিখছেন । এই বিষয়েও স্বস্তিকা মজা করে বলেছেন , তার প্রেম দীর্ঘজীবী হোক, আমি আর অনির্বাণ ছবিটা করি।
স্বস্তিকা নিজে তাসের ঘর এবং বিজয়া ছবির প্রশংসা করেছেন, যেগুলি জাতীয় স্তরে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। তবে হইচই প্ল্যাটফর্মে গার্হস্থ্য হিংসা এবং মেয়েদের অত্যাচারের মতো গল্প দেখে তার অনীহা রয়েছে। তিনি বলেন , আমি এই ধরনের বিষয় দেখতে পারি না।
নিজের জীবন নিয়ে স্বস্তিকা বলেন, জোর করে কেউ একা থাকে না। সবাই চায় ভালোবাসা থাকুক, সঙ্গী থাকুক। তার মতে, কোনো গুণী মহিলার সঙ্গী পাওয়া খুবই কঠিন। একদিন এক ব্যক্তি তাকে বলেন, আপনি এত ভালো অভিনয় করেন, কিন্তু আমি তো একটা কাজই জানি। এর পরেই স্বস্তিকা অনুভব করেন, অনেক গুণী মহিলার ক্ষেত্রে পুরুষদের কাছে সম্পর্কের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
এসকে//