আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে হামলা: কারণ ব্যাখ্যায় যা বললেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

ছবি: সংগৃহীত

ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী এমন হামলার বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। 

বুধবার (৭ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে  সে ব্যাখ্যা উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, একটি রেসিট্যান্স ফ্রন্ট পেহেলগামে হামলার দায় স্বীকার করেছে। এই সংগঠনটির সঙ্গে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত গোষ্ঠী লঙ্কর-ই-তৈয়েবার সম্পর্ক রয়েছে। এর মাধ্যমেই বোঝা যায় কাশ্মীরে হামলায় পাকিস্তানের যোগসূত্র রয়েছে। 

তিনি বলেন, পাকিস্তান নিজেদের দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তান ইতোমধ্যে বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে একটি পরিচিতি তৈরি করেছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়াও ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পেহেলগামে হামলা চালানো হয়েছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই গোষ্ঠীগুলো আরও হামলার পরিকল্পনা করছে। এজন্য তাদের থামাতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে। 

তিনি বলেন, ভারত ২০২৪ সালের মে এবং নভেম্বর মাসে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা কমিটির মনিটরিং টিমকে ওই রেসিট্যান্স ফ্রন্টের সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিল। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল এই সংগঠনটি পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে। 

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ভারত মনিটরিং টিমকে জানিয়েছিল যে লস্কর ও জইশ-ই-মোহাম্মদ, দ্য রেসিট্যান্স ফ্রন্টের মতো ছোট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে কাজ করছে। পরবর্তীতে ওই বছরের ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রেস বিবৃতিতে টিআরএফ’র কার্যক্রম বন্ধে পাকিস্তানকে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানায়। 

তিনি আরও বলেন,  পেহেলগামে হামলা পর তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা উঠে এসেছে। পাকিস্তান এই গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছিল। পরবর্তীতে রেসিট্যান্ট ফ্রন্টের দায় স্বীকার এবং লস্কর-ই-তৈয়বার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলোতে অনেক বিষয় স্পষ্ট হয়। 

প্রসঙ্গত, গেল ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এই হামলার জেরে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে। 

দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর মঙ্গলবার (৬ মে) গভীর রাতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। দেশটি এ অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। 

এমন প্রেক্ষাপটে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের যুদ্ধের মতো চূড়ান্ত পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হওয়ার সম্ভাবনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে সারাবিশ্ব। 

এমএ//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন