অর্থনীতি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলারে

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। 

যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ড—বিপিএম ৬ অনুযায়ী এই হিসাব ২৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। আর সরাসরি আমদানি বা জরুরি খাতে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখন ১৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তিতে মোট ১৩০ কোটি ডলার, এডিবি ও জাইকার ঋণ সহায়তা যুক্ত হওয়ায় রিজার্ভে বড় অঙ্কের এই যোগফল এসেছে। এর ফলে দীর্ঘদিন পর রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করল।

এই অগ্রগতির পেছনে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত) প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৯ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার—যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার বেশি। পাশাপাশি রপ্তানি আয়েও ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যদিও আমদানির হার ৫ শতাংশ বেড়েছে।

রিজার্ভের ভিন্ন ভিন্ন হিসাব রয়েছে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় ও নির্দিষ্ট খাতের সংরক্ষিত অর্থ বাদ দিয়ে যে অংশ তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য, সেটাকেই ‘ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ’ বলা হয়। এ হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে তা বর্তমানে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।

এই ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দিয়ে বর্তমান আমদানি ব্যয়ের হারে প্রায় সাড়ে তিন মাসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব, যেখানে আন্তর্জাতিকভাবে একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকার নির্দেশনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্টে দেশের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। কিন্তু করোনো মহামারির সময়ে আমদানির চাপ, ডলারের দামে অস্থিরতা ও লাগাতার অর্থপাচার রিজার্ভে বড় ধস নামায়। ওই সময় সংকট সামাল দিতে ২০২২ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের সহায়তা চায়।

সেই ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে রিজার্ভে স্থিতি ফিরতে শুরু করেছে। ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম ৬ অনুযায়ী ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন)।

 

এমএ//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন