ভরা বর্ষায় খরায় পুড়ছে পঞ্চগড়, থমকে গেছে আমন চাষ
উত্তরের খাদ্যসমৃদ্ধ জেলা পঞ্চগড়ে ভরা বর্ষা মৌসুমেও দেখা নেই ভারি বৃষ্টির। দীর্ঘ ২০ দিন ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খরার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জমিতে পানি না থাকায় কৃষকরা আমন চারা রোপণ করতে পারছেন না। এতে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন জেলার হাজারো কৃষক।
বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারে আষাঢ় মাস প্রায় শেষের দিকে চলে এলেও পঞ্চগড়ের আকাশে শুধু ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘ, কিন্তু নেই কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। আগে যেখানে ১৫ আষাঢ়ের মধ্যেই জমিতে আমন চারা রোপণের ধুম পড়ে যেত, সেখানে এবার এখনও জমিতে হাল চাষও শুরু করতে পারেননি অনেক কৃষক।
জেলার বোদা উপজেলার বোসপাড়া গ্রামের কৃষক তছলিম উদ্দিন বলেন, ‘গত বছর এই সময় আমন চারা রোপণ করেছিলাম। এবার জমিতে পানি না থাকায় হাল চাষই করতে পারিনি।’
বালাভীড় গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, ‘অনাবৃষ্টির কারণে জমি শুকিয়ে গেছে। হাল চাষ সম্ভব হচ্ছে না। অথচ বীজতলার চারাগুলো ইতোমধ্যেই রোপণের উপযোগী হয়ে উঠেছে।’
বৃষ্টির অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন পঞ্চগড়ের কৃষকরা। কেউ কেউ নিচু জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণের চেষ্টা করছেন, কিন্তু তাতে খরচ বাড়ছে বহুগুণ।
আমিনুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, ‘এই সপ্তাহেও যদি ভারী বৃষ্টি না হয়, তবে সেচ দিয়েই রোপণ করতে হবে, এতে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে।’
পঞ্চগড় আবহাওয়া অফিস জানায়, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় না থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পঞ্চগড় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন জানান, ‘আমন চাষের এখনও সময় আছে। আশা করছি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বৃষ্টিপাত শুরু হবে এবং পুরোদমে আমন চাষ শুরু হবে।’
তিনি জানান, এবারে জেলার ১ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭৪ মেট্রিক টন ধান।
তবে আবহাওয়ার এই অস্বাভাবিক আচরণ না বদলালে, পঞ্চগড়ের কৃষকরা এবার আমন মৌসুমে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বেন—এমন আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারাও।
এসি//