আন্তর্জাতিক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আরও ৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত

ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান ও নির্বিচার হামলা থামছে না। প্রতিদিনের মতো গেল রোববারও (১৩ জুলাই) ইসরাইলি বাহিনীর চালানো ভয়াবহ বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৯৫ ফিলিস্তিনি।  

সোমবার (১৪ জুলাই) ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।  

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রোববার গাজার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী।  হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল একটি জনবহুল বাজার ও মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি পানি সংগ্রহ কেন্দ্র।  গাজা শহরের বাজারে চালানো হামলায় প্রাণ হারান ১৭ জন, যাদের মধ্যে গাজার খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা. আহমেদ কান্দিলও ছিলেন।  অন্যদিকে, নুসেইরাতের পানি সংগ্রহস্থলে হামলায় নিহত হন আরও ১০ জন, যাদের বেশিরভাগই শিশু।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নারী ও শিশুরা পানি সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালে সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।  এতে ঘটনাস্থলেই অন্তত ছয় শিশুর মৃত্যু হয়।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল একজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা। তবে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে অন্যত্র বিস্ফোরিত হয়। এই দাবির পক্ষে কোনও স্বাধীন উৎস থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৮ হাজার ২৬ জন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ জন।

শিশুদের দুরবস্থাও চরমে পৌঁছেছে।  জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, শুধু জুন মাসেই ৫ হাজার ৮০০ এর বেশি শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ১ হাজারের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। গতকাল রোববারও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

ইউনিসেফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিশুদের দেহ গলে যাচ্ছে।  এটি শুধু পুষ্টির সংকট নয় বরং, শিশুদের জীবন রক্ষার এক জরুরি সংকট।

এদিকে অব্যাহত হামলার পাশাপাশি গাজায় মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জ্বালানির অভাব, অবরোধ ও লাগাতার বোমাবর্ষণে বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ পানিশোধন ও নিষ্কাশন কেন্দ্র। ফলে সাধারণ মানুষকে প্রাণ ঝুঁকি নিয়ে দূরবর্তী পানি সংগ্রহ কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে।

এসকে// 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন