বিএনপি

বিচারপতি খায়রুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান বিএনপি মহাসচিব

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের গ্রেপ্তারকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতির রায় রাষ্ট্রবিরোধী ছিল। দেরিতে হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। এখন আইন অনুযায়ী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

খায়রুল হকের রায়ের পর আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এরপর দেশের সব রাজনৈতিক সংকটের জন্য এটি দায়ী। তিনি বিচার বিভাগের প্রতি আস্থার জায়গাটিকে ধ্বংস করেছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শিশু একাডেমির ভবনটি ভেঙে ফেলা ও স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা এটির বিরোধিতা করছি। কারণ ভবনটি ভেঙে ফেলা হলে তা শিশুদের মেধা ও মনন বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

এর আগে, আজ সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। 

প্রসঙ্গত, দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে এবিএম খায়রুল হক শপথ নেন ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। পরের বছর (২০১১ সাল) ১৭ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

বিচারাঙ্গনে তুমুলভাবে আলোচিত-সমালোচিত এ বিচারপতির বেশ কয়েকটি রায় চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তিনি নিজে আওয়ামী আমলে নানাভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে।

প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিলের টাকায় নিজের চিকিৎসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। অবসর নেওয়ার কয়েকদিন আগে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। এতে দেশে রাজনৈতিক সংঘাতের পথ উন্মুক্ত হয়।

রাজনৈতিক একটি বিষয়কে আদালতের আওতাধীন করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন বলে রায় দিয়েছিলেন এবিএম খায়রুল হক। এছাড়া বিতর্কিত একাধিক বিচারপতিকে শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

খায়রুল হকের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ১৮ আগস্ট ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ইমরুল হাসান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে খায়রুল হক ছিলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন