টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে ২০০ ঘর প্লাবিত,সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট
নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে সাগরের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপে দুই শতাধিক বসতঘর প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও গাছপালা। প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে বেড়িবাঁধ, বালিয়াড়ি ও নানা স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ায় টানা ৫ দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুট বন্ধ রয়েছে। এতে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে দ্বীপে।
সোমবার (২৮ জুলাই) উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, অমাবস্যার জোয়ারে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পায়। এতে দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ে এবং শতাধিক বসতঘর প্লাবিত হয়। গাছপালা উপড়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা।
তিনি বলেন, চলতি বর্ষায় নিম্নচাপ ও লঘুচাপের কারণে বারবার সেন্টমার্টিন প্লাবিত হচ্ছে। গত তিন দিনের অবস্থায় দ্বীপের মানুষ চরম আতঙ্কে আছে। দ্রুত স্থায়ী সমাধান নেওয়া জরুরি।

টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শতাধিক বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা ও সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ টপকে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। শতাধিক বসতঘর প্লাবিত এবং কিছু ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। দ্বীপরক্ষার বাঁধটি এখন চরম ঝুঁকিতে। যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে।

স্থানীয়রা জানান, ২০২২ সালের জুনে ১৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে শাহপরীর দ্বীপে প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সিসি ব্লক ধসে পড়ে। দ্রুত সংস্কার ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেকনাফের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, অমাবস্যার জোয়ারে বেড়িবাঁধ টপকে পানি প্রবেশের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
এদিকে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা চার দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রলার না চলায় খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে টেকনাফের কয়েকটি গ্রাম এবং সেন্টমার্টিনের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে। নৌপথ বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছে।
আই/এ