গাজার অবরোধের প্রতিবাদে লন্ডনের ইহুদিরা
লন্ডনে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবিতে ইহুদি অধিকারকর্মীদের বিক্ষোভ
ইহুদি অধিকারকর্মীরা ‘গাজা গণহত্যা’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করেছে।
লন্ডনে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের সামনে শুক্রবার এক বিক্ষোভ সমাবেশে করে তারা। এসময় থালাবাসন বাজিয়ে এবং স্লোগান দিয়ে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত তজিপি হোতোভেলিকে বহিষ্কারের দাবী জানান আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভকারীরা ‘ইন্টারন্যাশনাল জিউইশ অ্যান্টি-জায়োনিস্ট নেটওয়ার্ক’ ও ‘জিউস এগেইনস্ট গাজা জেনোসাইড’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমবেত হয়েছিলেন। তারা বলেন, “এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির দায়িত্ব নেওয়া। ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা। হোতোভেলি একজন বর্ণবাদী, গণহত্যাকারী। এসব বিষয়ে তার অনুশোচনা নেই।
একজন আন্দোনকারী বলেন, “২০ লাখ নিরপরাধ ফিলিস্তিনি শিশু, তাদের মা-বাবা, ভাই-বোন মারা যাচ্ছেন। আমাদের এখনই জেগে উঠতে হবে—জনসাধারণকে এবং সরকারকে জাগাতে আমরা থালা-বাসন বাজিয়ে চিৎকার করছি। ডেভিড ল্যামি ‘কিড স্টারভার’। তিনি শিশুদের অনাহারে রাখছেন।”
ইসরায়েল কর্তৃক গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় না খেয়ে ১৬২ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৯২ জনই শিশু। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, গাজার প্রতি চারজন বাসিন্দার মধ্যে একজন দুর্ভিক্ষে ভূগছে। প্রায় এক লাখ নারী ও শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।
এসময় জানানো হয়, গাজার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ কয়েকদিন ধরে কোনো খাবার পাচ্ছে না। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছালে ২৪ লাখ বাসিন্দার মৌলিক প্রয়োজন পূরণ অসম্ভব।
এর মধ্যে, গেল নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
২০২০ সালে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান তজিপি হোতোভেলি। গাজায় সামরিক অভিযান নিয়ে তার প্রকাশ্য সমর্থনের কারণে আগে থেকেই বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন তাকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছে। তিনি বারবার বলেছেন, এসব প্রতিবাদ তাকে দমাতে পারবে না। এগুলো কেবল তাকে চুপ করানোর অপচেষ্টা