আন্তর্জাতিক

'গাজা পুরোপুরি দখলের সিদ্ধান্ত ইসরাইলের'

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণভাবে দখলের পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। সোমবার (০৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সেনা অভিযান আরও জোরদার করা হবে। খবর আনাদোলু

ইসরাইলি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ এক ঘনিষ্ঠ সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ‘এখন আর পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই — ইসরাইল গাজা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দিকে এগোচ্ছে।’

এই সূত্র আরও জানায়, যেসব এলাকায় জিম্মিরা রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানেও অভিযান চালানো হবে। এমনকি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) কেউ এই অভিযানে দ্বিমত পোষণ করলে তাকে সরে যেতে হবে।

চ্যানেল ১২-এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ ইসরাইলের গাজা সম্পর্কিত নীতিতে বড় ধরনের মোড় আনছে। বিশেষ করে জনবহুল এলাকাগুলোর ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ এতে স্পষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গাজার কেন্দ্রীয় শরণার্থী শিবিরগুলো।

অন্যদিকে, সম্প্রচারমাধ্যম কান-এর বরাতে জানা যায়, ইসরাইলি মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলোচনার পর নেতানিয়াহু এই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যদিও নিরাপত্তা মহল এর বিরোধিতা করেছিল।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নেতানিয়াহু সরাসরি ‘গাজা দখলের’ কথা বলেছেন, যা হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্য নির্দেশ করে।

ইয়েদিওথ আহরোনোথ আরও দাবি করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে এই সামরিক তৎপরতার ব্যাপারে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।

এদিকে চ্যানেল ১৩ জানায়, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রধান আইয়াল জামির তার নির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল করেছেন। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে যুদ্ধবিরতি আলোচনা ভেস্তে যাওয়া এবং অভিযানের বিস্তৃতি নিয়ে চলমান চাপ।

হারেতজ-এর মতে, ২৯ জুলাই নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভায় একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন, যেখানে গাজার কিছু অংশ পুনর্দখলের প্রস্তাব ছিল — যা যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনপ্রাপ্ত বলে দাবি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর লাগাতার আক্রমণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬১,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। অঞ্চলটি প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং মানবিক সংকট চরম পর্যায়ে।

এদিকে, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত  নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্ট-এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একইসঙ্গে, গাজায় পরিচালিত হামলার প্রেক্ষিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলছে।

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন