দেশজুড়ে

ছাত্রীদের আপত্তিকর মেসেজ অধ্যক্ষের, কলেজ গেটে স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে প্রতিবাদ

ছবি: সংগৃহীত

ছাত্রীদের আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোসহ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হকের বিরুদ্ধে। ছাত্রীদের পাঠানো এসব মেসেজ স্ক্রিনশট আকারে ব্যানারে ঝুলিয়ে দিয়ে ওই অধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) কলেজের প্রধান ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগ, প্রশাসনিক কাজে অপারগতা ও প্রত্যক্ষ মদদে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এস এম মোজাফফর হোসেন এবং শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মনিরুজ্জামান বিদ্যুৎতের পদত্যাগসহ চার দফা দাবি তুলে ধরেন।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় দাবি পূরণের আশ্বাস না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

এদিকে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে অধ্যক্ষ সামসুল হক তার ব্যবহৃত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছিল দাবি করে স্ক্রিনশটের ব্যপারে সবাইকে বিচলিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তার  আইডিতে একটি পোস্ট করেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটগুলোর একটিতে দেখা যায়, অধ্যক্ষ সামসুল হক তার ছাত্রীর সৌন্দর্যের প্রশংসার এক পর্যায়ে লেখেন, “আরো সুন্দর ছবি আছে তোমার?উত্তরে ওই শিক্ষার্থী বলেন, “আর নেই স্যার। আমি সুন্দর না। আমার যা মনে হয়

সামসুল হক লেখেন, “আছে আছে। ওড়না ছাড়াউত্তরে শিক্ষার্থী বলেন, “নেই স্যার। স্যরি স্যারতাৎক্ষণিক সামসুল হক বলেন, “কলেজে দেখেছি তোজবাবে শিক্ষার্থী বলেন, “না স্যার। স্যরি। নেই স্যার। মাফ করবেনএরপর সামসুল হক বলেন, “ওকে। সামনেই দেখব। অনেক অনেক অনেক ভালো থেকো। বাই

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, মেসেঞ্জারের ওই কথোপকথন ২ বছর আগের। ওই সময়ে বিএমসি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন সামসুল হক স্যার। সেখানে একাদশ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় কলেজে যাতায়াতের সময় প্রায়ই উনি (অধ্যক্ষ) আমার সঙ্গে কথা বলতেন। এভাবে একদিন আমার সঙ্গে ফেসবুকের বন্ধু তালিকায় যুক্ত হন। এরপর ফেসবুক স্টোরিতে কোনো ছবি দিলে অশ্লীল মন্তব্য করতেন। এক পর্যায়ে উনি আমার কাছ থেকে ওড়না ছাড়া ছবি চান। ওই মুহূর্তে তাকে ব্লক করে স্ক্রিনশট রেখে দিই।

এতদিন নীরব থাকার কারণ জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, বিএমসি কলেজ থেকে নওগাঁ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে বদলি হয়ে আসেন সামসুল হক। এদিকে ২০২৪-২৫ সেশনে নওগাঁ সরকারি কলেজে তিনি ভর্তি হয়েছেনতাই ভয়ে এতদিন নীরব ছিলেনহঠাৎ ফেসবুকে সামসুল হক স্যারের সঙ্গে কয়েকজন ছাত্রীর মেসেজের স্ক্রিনশট ভাইরাল হতে দেখে তিনিও প্রতিবাদ জানান

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই এখানকার সাহিত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তিনি জড়িত। কলেজে নাচের ইভেন্টে অংশগ্রহণ করার একদিন পর প্রিন্সিপাল স্যার তাকে ফেইসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। একসেপ্ট করার পর মাঝেমধ্যেই স্যার মেসেজ পাঠাতেন। এরপর কোথাও দেখা হলে উনি (অধ্যক্ষ) তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত তাকিয়ে সৌন্দর্যের প্রশংসা করতেন। তার কথাবার্তাসহ তাকানোর ধরন পুরোটাই অশ্লীল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সামসুল হক বলেন, ‘স্ক্রিনশটের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। গুটিকয়েক শিক্ষার্থীকে কখনো প্রতিপক্ষ মনে করি না। যারা আমার বিষয়ে আন্দোলন করছে তাদেরকে আমি শিক্ষার্থী হিসেবেই দেখতে চাই।

 

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন