পর্যটন

বিশ্ব পর্যটন দিবসে চাঙ্গা কক্সবাজার, অনিশ্চয়তায় সেন্টমার্টিন

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজারে শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুমের আমেজ। সৈকত নগরীতে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও বিভিন্ন পর্যটনসেবী প্রতিষ্ঠান নতুন সাজে সেজেছে। বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। শহরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে নতুন আশার আলো।

তবে এই আনন্দঘন পরিবেশের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ক্ষোভ ও সমালোচনা। অভিযোগ উঠেছে—‘বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটিনামের জেলা প্রশাসনের একটি সংস্থা আত্মীয়স্বজনকে কার্ড দিয়ে সৈকতে যত্রতত্র ব্যবসার সুযোগ করে দিয়েছে। এর জের ধরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার পর জেলা প্রশাসক সালাউদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়। 

একইভাবে, ‘টমটম ও মিশুকনামের প্রাণঘাতী বাহনের লাইসেন্স দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজকে প্রত্যাহার করা হয়। এ বিতর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দিনের নামও উঠে আসে। তাকেও পরে রাঙামাটি বদলি করা হয়। তবে তাদের সময়ে নেয়া বহু সিদ্ধান্ত এখনও বহাল থাকায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অন্যদিকে, দেশের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা। গত বছর সরকারি বিধিনিষেধের কারণে ভরা মৌসুমেও মাত্র দুমাস দৈনিক দুই হাজার পর্যটক ভ্রমণের সুযোগ পান। এবারও এ নির্দেশনা বহাল থাকছে।

দ্বীপের স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিদিন অন্তত পাঁচ হাজার পর্যটকের ভ্রমণ নিশ্চিত করা গেলে তাদের বছরের আয়ের পথ উন্মুক্ত হবে। কিন্তু অনিশ্চয়তার কারণে এ বছর হোটেল-রিসোর্ট সংস্কার বা মৌসুমি প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হয়নি। অনেক প্রতিষ্ঠান অযত্নে পড়ে আছে।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের কক্সবাজার ব্যবস্থাপক রায়হান উদ্দিন আহমেদ জানান, দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও পর্যটন মেলাসহ নানা আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, “আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। এবারের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত গত বছরের নিয়মেই পর্যটক পরিবহন চলবে।

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক)-এর সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, “এখন সারাবছরই পর্যটক আসছেন। তাই মৌসুম নিয়ে বিশেষ তোড়জোড় নেই। তবে সেবার মান যেন বজায় থাকে, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়ন প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, “বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে সৈকত এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সারাবছরই নিরাপত্তা থাকে, তবে এখন তা আরও জোরদার করা হয়েছে।

বিশ্ব পর্যটন দিবসে কক্সবাজারে উৎসবের আমেজ থাকলেও সেন্টমার্টিনের অনিশ্চয়তা, প্রশাসনের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা দেশের পর্যটনশিল্পকে এখনও বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে রেখেছে।

 

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন