যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান
তুরস্কে পাঁচ দিনের আলোচনার পর যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে একমত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশই চলমান যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে যুদ্ধবিরতির বিভিন্ন শর্ত ও বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ততদিন পর্যন্ত সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উভয় সরকার।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত, যা ডুরান্ড লাইন নামে পরিচিত। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। মূল বিরোধের কেন্দ্র তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের উগ্রপন্থি গোষ্ঠী, যাকে পাকিস্তান নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও গোষ্ঠীটি এখনো সক্রিয়।
পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান টিটিপিকে আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে— যদিও কাবুল বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সম্প্রতি উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় ৯ অক্টোবর, যখন কাবুলে টিটিপি নেতাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এতে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ ও ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ কয়েকজন নিহত হন। এর জবাবে ১১ অক্টোবর সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাচৌকিতে হামলা চালায় আফগান সেনারা। দু’পক্ষের গোলাগুলিতে প্রাণ হারান ২০০-র বেশি আফগান সেনা ও অন্তত ২৩ পাকিস্তানি সেনা।
১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলা এই সংঘাতের পর ১৫ অক্টোবর দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। এরপর দোহা ও ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হয় ধারাবাহিক বৈঠক, যেখানে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নেয় তুরস্ক ও কাতার।
বৈঠক চলাকালে ২৮ অক্টোবর আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলেও মধ্যস্থতাকারীদের উদ্যোগে তা পুনরায় শুরু হয়। অবশেষে ৩০ অক্টোবর আলোচনার শেষ দিনে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয়ই যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সম্মতিতে পৌঁছায়।