অস্ট্রেলিয়ায় শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া, আদালতে দুই শিশু
আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। নতুন আইন অনুযায়ী মেটা, টিকটক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে ১৬ বছরের কম বয়সী কেউ তাদের সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না। তবে এ আইনের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ১৫ বছর বয়সী নোয়া জোনস ও ম্যাসি নেল্যান্ড নামের দুই শিশু।
রোববার (৩০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
দেশটির সরকার জানিয়েছে, বয়সসীমা অতিক্রম না করা শিশুরা যেসব 'এইজ রেস্ট্রিক্টেড' প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, সেগুলোকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে, নাহলে লাখ লাখ ডলারের জরিমানা ভোগ করতে হবে।
এদিকে বার্তা সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন ১৫ বছর বয়সী নোয়া জোনস ও ম্যাসি নেল্যান্ড। তাদের যুক্তি, এই নিষেধাজ্ঞা শিশুদের অধিকারকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করার শামিল।
নোয়া বলেন, অনলাইনে খারাপ জিনিস আছে ঠিকই, কিন্তু ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াই নিষিদ্ধ করে দেয়াটা এর সঠিক সমাধান নয়।
তিনি বলেন, সরকারের কাছ থেকে জরিমানা এড়ানোর জন্য সম্পদ ও অর্থ ব্যবহার না করে বরং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর তাদের উচিত এই সম্পদ ব্যবহার করে ক্ষতিকর কনটেন্ট সরিয়ে ফেলা।
ম্যাসি নেল্যান্ড বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গেমিং এবং স্ক্রিন টাইম নিয়ে তাঁও কিছু সমস্যা আছে বলে মনে হয়। তবে এগুলোর মাধ্যমে শিক্ষা, যোগাযোগ এবং সমাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মতো 'অনেক ভালো দিকও' এনে দেয়।
তিনি মনে করেন, একযোগে নিষিদ্ধ করার বদলে প্রয়োজন অনলাইন ঝুঁকি সম্পর্কে আরও ভালো শিক্ষা, শক্তিশালী নিরাপত্তাব্যবস্থা, যেমন বয়স যাচাইকরণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের উপযুক্ত দিকনির্দেশনা।
তাদের দাবি, এই নিষেধাজ্ঞা তাদের পারিবারিক–সামাজিক সম্পর্ক এবং বিশেষ করে রাজনীতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী আনিকা ওয়েলস বলেন, 'আমরা কোনো হুমকিতে ভয় পাব না। আইনি চ্যালেঞ্জ বা বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান—কেউই আমাদের দমাতে পারবে না। অস্ট্রেলিয়ার অভিভাবকদের স্বার্থে আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় থাকব।'
জরিপে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ অভিভাবক সরকারের এই নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করছেন।
প্রসঙ্গত, একটি মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় আদালতে লড়ছেন ওই দুই শিশু।
আই/এ