আন্তর্জাতিক

ফের গ্রেপ্তার হলেন নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদী

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও প্রখ্যাত নারী অধিকার কর্মী নার্গিস মোহাম্মদীকে আবারও গ্রেপ্তার করেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। তার ফাউন্ডেশনের বরাতে জানানো হয়েছে, ৫৩ বছর বয়সি মোহাম্মদীকে ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে সহকর্মীদের সঙ্গে আটক করা হয়। 

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নোবেল কমিটি। এক বিবৃতিতে তারা নার্গিস মোহাম্মদীর ‘নৃশংস গ্রেপ্তারের’ উদ্বেগ জানিয়ে ইরানি কর্তৃপক্ষের কাছে তার অবস্থান স্পষ্ট করা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শর্তহীন মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।

ইরানে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থান এবং মানবাধিকার রক্ষায় নিরলস ভূমিকার জন্য ২০২৩ সালে নার্গিস মোহাম্মদীকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তিনি ২০২১ সাল থেকে তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দি ছিলেন। চলতি বছরের ডিসেম্বরে চিকিৎসার জন্য তাকে তিন সপ্তাহের অস্থায়ী মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

বিবিসি জানায়, সম্প্রতি মৃত অবস্থায় পাওয়া আইনজীবী খোসরো আলিকর্দির স্মরণসভায় যোগ দিতে গিয়ে সর্বশেষ গ্রেপ্তারের শিকার হন মোহাম্মদী। গ্রেপ্তারের সময় মোহাম্মদীর সঙ্গে আরও কয়েকজন অধিকারকর্মীকেও আটক করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, তারা ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ ও ‘ইরান দীর্ঘজীবী হোক’—এ ধরনের স্লোগান দিচ্ছিলেন।

নার্গিস মোহাম্মদীর স্বামী তাগি রহমানি বিবিসি ফার্সিকে বলেন, “তারা নার্গিসকে সহিংসভাবে গ্রেপ্তার করেছে। 

তিনি আরও জানান, ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইরানি কর্তৃপক্ষ দমন-পীড়ন আরও বাড়িয়েছে—এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন মোহাম্মদী। গেল সপ্তাহে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি লেখেন, ইরান নাগরিকদের ব্যক্তিগত ও জনজীবনের প্রতিটি দিক নিয়ন্ত্রণ করছে। নজরদারি, সেন্সরশিপ, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও সহিংসতার স্থায়ী হুমকিতে সাধারণ মানুষের শান্তি ভেঙে পড়েছে।

গেল এক বছর ধরে তিনি বাধ্যতামূলক হিজাব পরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন এবং দেশজুড়ে মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছেন। 

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে এই দৃঢ় অবস্থানের কারণে তাকে ইতোমধ্যে ১৩ বার গ্রেপ্তার, পাঁচবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে ৩১ বছরের কারাদণ্ড ও ১৫৪টি বেত্রাঘাতের সাজা দেওয়া হয়েছে।

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন