ক্যাস্ত্রোর সঙ্গে ছিলো আত্মিক সম্পর্ক, মৃত্যুও একই দিনে
কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো আর দিয়াগো ম্যারাডোনার সম্পর্ক যেমন ছিলো আত্মিক, তেমনি একই রাজনৈতিক মতাদর্শের। ক্যাস্ত্রোর মৃত্যুর পর শোকাতুর ম্যারাডোনা তাকে সম্বোধন করেছিলেন দ্বিতীয় বাবা হিসেবে। সুসময়ের বন্ধুত্ব টিকেছিলো ম্যারোডোনের চরম দুঃসময়েও। এমন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা দুই নক্ষত্রের পতনও কী তাই একই দিনে? বন্ধু ফিদেল ক্যাস্ত্রোর মৃত্যুর দিনটিতেই ইহলোকের মায়া ছাড়লেন ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনা।
ফুটবল দিয়ে গোটা বিশ্বকে বুদ করে রাখা ম্যারাডোনা শুধু একজন খেলোয়ারই নন। পুঁজিবাদী সমাজের গালে চপেটাঘাত করা এই রহস্য মানবের সম্পর্ক ছিলো বামপন্থি রাজনীতির ধারক কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের মতোর বিশ্ববরেণ্য মানুষের সঙ্গে।
১৯৮৬ সালে প্রথমবার কিউবা গিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। ক্যাস্ত্রোর সঙ্গে পরিচয়ের মধ্য দিয়েই বন্ধুত্বের শুরু তারপর অনেকবারই কিউবা যান তিনি। বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে ফিদেল ক্যাস্ত্রোকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন তার ১০ নম্বর জার্সি।
ফুটবল থেকে অবসরের পর এক সময় মাদক সেবনের জন্য যখন একাকী বিপর্যস্ত অবস্থা ম্যারাডোনার, তখনও তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন ক্যাস্ত্রো। লা পেড্রেরা ক্লিনিকে ব্যবস্থা করে দেন ম্যারাডোনার চিকিৎসার। ম্যারাডোনার ঘনিষ্ঠদের মতে, ক্যাস্ত্রো এগিয়ে না এলে প্রাণ বাঁচানোই মুশকিল হয়ে যেত আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের।
ফিদেল ক্যাস্ত্রো-ম্যারাডোনার আড্ডায় বাদ যেত না খেলা থেকে রাজনীতি কোনও কিছুই। নেশায় আসক্তি কাটিয়ে ফেলতে ম্যারাডোনাকে উৎসাহ জোগাতেন ক্যাস্ত্রো। ম্যারাডোনাকেও দেখা গেছে পুজিঁবাদী মোড়লদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ফিদেলের রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচারে। ম্যারাডোনার যে বাঁ পায়ে মোহবিষ্ট ছিলো গোটা দুনিয়া, সে বাঁ পায়েই এঁকেছিলেন ফিদেল ক্যাস্ত্রোর ট্যাটু।
ফিদেল ক্যাস্ত্রোর কাছে ম্যারাডেনা ছিলেন ফুটবলের চে গুয়েভারা। ২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর মৃত্যু হয় কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর। ফিদেল ক্যাস্ত্রোর মৃত্যুর চার বছরের মাথায় ঠিক একই দিনে বিদায় নিলেন ফুটবল ঈশ্বর দিয়াগো ম্যারাডোনা।
এস