আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

দিল্লিতে জ্বলছে গণচিতা, কাঠের সংকট

কয়েক দিন ধরে একটানা করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুহারে রেকর্ড করছে ভারত। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। সারা দেশের মতো রাজধানী নয়া দিল্লিতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে লাশ দাহ করার কাঠ। মিলছে না সৎকারের লোকও। 

সোমবার (২৬ এপ্রিল) শহরের গাজিপুরের এক শ্মশানে দেখা গেল করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাহ করতে জ্বলছে গণচিতা। এ যেন পুরো ভারতেরই প্রতিচ্ছবি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দিল্লির বড় শ্মশানগুলোতে দীর্ঘ লাইনের পরেও লাশ দাহ করার সুযোগ না মেলায় বিভিন্ন স্থানে তৈরি করতে হচ্ছে ‘মেক-শিফট’ বা অস্থায়ী শ্মশান। ফাঁকা মাঠ, পার্ক, এমনকি গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায়ও গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে লাশ দাহ করার কাজ।

মানুষকে ঘরে থাকতে এবং করোনা বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে টুইট করেছেন ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা অজয় মাকেন। টুইটে তিনি দিল্লির সুভাষ নগর শ্মশানের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে সারি সারি চিতায় জ্বলছে লাশ। আর অপেক্ষমান লাশের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

তিনি বলছেন, আগে তাদের কাছে হাসপাতালের বেড, অক্সিজেন বা প্লাজমা পেতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ আসত। এখনও অনুরোধ আসছে, আর তা হচ্ছে শ্মশানে অনেক বড় লাইন, দ্রুত লাশের সৎকার করিয়ে দিন।

পূর্ব দিল্লির বিজেপি নেতা ও স্থানীয় পৌরসভার সাবেক মেয়র পঙ্কজ লুথরার বক্তব্য, ‘করোনার প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের মৃত্যুর ঘটনাও। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, শ্মশানে জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। লাশ দাহ করার মতো কাঠও আর পাওয়া যাচ্ছে না।’

দিল্লির এনসিআর অঞ্চলের গাজিপুর শ্মশানের  কাছে পার্কিং লটে চিতা জ্বালানো হচ্ছে। একই ঘটনা ঘটেছে সরাই কালে খান, ওয়াজিরাবাদ অঞ্চলে। একইভাবে দিল্লির সীমাপুরি শ্মশান সংলগ্ন পার্কিংয়ের মাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে লাশ দাহ করতে।

পূর্ব দিল্লির মেয়র নির্মল জৈন বলছেন, ‘দৈনিক মৃতের সংখ্যা এত বেড়ে গেছে যে, সেই চাপ নিতে পারছে না শহরের শ্মশানগুলো। 

একই পরিস্থিতি কবরস্থানেও। করোনায় আক্রান্ত রোগীর লাশ অনেক বেশি সংখ্যায় আসতে থাকলে আর কিছু দিন পরই কবর দেয়ার জায়গা শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দিল্লির কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণকারীরা।

দিল্লির বাহাদুর শাহ জাফর সড়কের পেছনে কবরস্থানের কর্মী মোহাম্মদ নাসের বলছেন, ‘আগে দিনে দুই বা তিনটি লাশ আসত। এখন দিনে ২০ থেকে ২৫টি করে লাশ আসছে। শেষ কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এখানে আর কবর দেয়ার মতো জায়গা নেই প্রায়।’

এএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন