আর্কাইভ থেকে এশিয়া

মিয়ানমারে সু চির দল নিষিদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে জান্তা

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি কারাবন্দি নেত্রী সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি এনএলডি’র নিবন্ধন বাতিলে পদক্ষেপ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার টুডের উদ্বৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শুক্রবার মিয়ানমার টুডেকে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান থেইন সোয়ে বলেন, এনএলডির বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপি করার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে সরকারের তদন্তে। আইন অনুযায়ী এই ধরণের কর্মকাণ্ড অবৈধ হওয়ায় আমরা এনএলডির নিবন্ধন বাতিল করতে যাচ্ছি।

মিয়ানমার টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সবগুলো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে জান্তা সরকার। এতে সরকারের পক্ষ থেকে সবগুলো রাজনৈতিক দলকে উপস্থিত থাকতে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল।

তবে দেশটির সামরিক বাহিনী সমর্থিত রাজনৈতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টিসহ আরও দু-একটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সভা বর্জন করে সক্রিয় সব রাজনৈতিক দল। ওই মতবিনিময় সভাতেই এনএলডির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারে সামরিক বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এনএলডির কয়েকজন দলছুট নেতা-কর্মীও রয়েছে। এমন একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওই মুখপাত্র।

পরে সেনাসমর্থিত রাজনৈতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির উচ্চ পর্যায়ের এক নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ করে রয়টার্স। তিনি জানান, মতবিনিময় সভায় তাদের দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই প্রতিনিধি বলতে পারবেন। এখনও তিনি সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

গেল এক ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাসীন সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এ সময় দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির পার্লামেন্ট সদস্য ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের বন্দি করা হয়।

অভ্যুত্থানের পরই সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন সু চি। তাকে অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছে। অবৈধ ওয়াকিটকি, ক্ষমতায় থাকাকালে ঘুষ নেওয়া, রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য পাচারসহ কয়েকটি অভিযোগে বর্তমানে আদালতে তার বিচার চলছে। বিচারকাজ চললেও সু চিকে আদালতে সশরীরে উপস্থিত করা হচ্ছে না। ট্রায়ালে ভিডিও কলের মাধ্যমে সু চিকে যুক্ত করা হচ্ছে।

এমনকি তাকে আইনজীবীদের সঙ্গেও সরাসরি কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিডিও কলের মাধ্যমে নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছেন সু চি।

এদিকে, অভ্যুত্থানের পর থেকেই ফুঁসে ওঠে মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী জনগণ। দুই ফেব্রুয়ারি থেকে ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে তারা।

বিক্ষোভ শুরুর প্রথম দিকে সংযম দেখালেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আগ্রাসী হয়ে উঠতে থাকে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে লাঠি, রাবার বুলেট, জলকামানের পরিবর্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন