আর্কাইভ থেকে এশিয়া

ভালো আছেন সু চি: জান্তাপ্রধান

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ভালো আছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং। শনিবার এ তথ্য দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, গেল এক ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর গেল বৃহস্পতিবার প্রথম কোনো টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এসব বলেন দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। হংকংয়ের ফিনিক্স টেলিভিশনকে দেওয়া দুই ঘন্টার ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে সু চিকে নিয়ে মুখ খোলেন জান্তাপ্রধান।

এএফপি জানায়, মিন অং হ্লাইংয়ের পুরো সাক্ষাৎকার এখনো প্রচারিত হয়নি। তবে এর একটি অংশ গতকাল শনিবার প্রকাশিত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। সাক্ষাৎকারের যে অংশটুকু সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাতে মিন অং হ্লাইং বলেন, অং সান সু চি সুস্থ আছেন। তিনি বাড়িতেই আছেন। তার স্বাস্থ্য ভালো আছে। মামলার শুনানির জন্য কয়েক দিনের মধ্যে আদালতে যাচ্ছেন তিনি।

সাক্ষাৎকারে সু চির রাজনৈতিক অর্জন সম্পর্কে সেনাপ্রধানকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, সংক্ষেপে, সু চি যা কিছু করতে পারেন তা করেছেন।

সেনা অভ্যুত্থানের জেরে গৃহবন্দী হওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি সু চিকে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়েছে জান্তা সরকার। এসব মামলার মধ্যে ঔপনিবেশিক আমলের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলা রয়েছে।

মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোর একটি আদালতে সু চির মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামীকাল সোমবার। গৃহবন্দী হওয়ার পর প্রথমবার সশরীরে আদালতে হাজির হতে পারেন তিনি। এর আগের শুনানিতে ভার্চুয়ালি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এমনকি তাকে আইনজীবীদের সঙ্গে সরাসরি দেখা বা কথা বলতেও দেওয়া হয়নি। সেনাদের উপস্থিতিতে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছেন সু চি।

মিয়ানমারে গেল এক ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান হয়। তারপর থেকেই গৃহবন্দি আছেন সু চি। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হচ্ছে ব্রিটিশ আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে দায়ের করা অভিযোগ।

গেল বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুল জয় পায় তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি এনএলডি। দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বললেও কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ আনে দেশটির সেনাবাহিনী। তাদের এই অভিযোগ নাকচ করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। কথিত জালিয়াতির অজুহাত তুলে গেল এক ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান করে দেশটির সেনাবাহিনী। সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাতের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে তারা। একই সঙ্গে সু চিসহ বেসামরিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির গণতন্ত্রপন্থীরা। সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে আট শতাধিক বিক্ষোভকারী। আহত হয়েছে অনেকে। গ্রেপ্তার হয়েছে হাজারো বিক্ষোভকারী।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনর্বহাল ও সু চিসহ গ্রেপ্তার বেসামরিক ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে দেশটির জান্তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এই আহ্বানের প্রতি কর্ণপাতের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন