আর্কাইভ থেকে ক্রিকেট

মুশফিকের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও আড়াইশো হলো না বাংলাদেশের

দুশমন্থ চামিরার শুরুর আঘাতের পর দুই দফা বৃষ্টির বাধা পেরিয়ে মুশফিকুর রহীমের ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরি সত্ত্বেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১১ বল বাকি থাকতেই ২৪৬ রানে অল-আউট হয়ে যেতে হলো বাংলাদেশকে।

মুশফিক আগের দিনই সেঞ্চুরিটা পেতে পারতেন কিন্তু থেমেছিলেন ১৬ রান দূরে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাকে নামতে হয়েছে ১৫ রানের মধ্যে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান ফিরে যাওয়ার পর। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি গড়েছেন ৮৭ রানের। এরপর খুব লম্বা সময় সঙ্গ পাননি কারও কাছ থেকে, তবে নিজ থেকেই দায়িত্ব তুলে নিয়ে মুশফিক টেনেছেন বাংলাদেশকে। 

টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার প্রথম ওভারে ইসুরু উদানার শুরুটা হয়েছিল বীভৎস, এক বৈধ ডেলিভারির বিপরীতে তামিমের দুই চার ও নো-বলে এসেছিল ৯ রান। তবে শীঘ্রই গল্পটা বদলে যায় পরের ওভারে দুশমন্থ চামিরা আসার পর। দারুণ দুই ইনসুইংয়ে ৪ বলের ব্যবধানে ফিরিয়েছেন তামিম ও সাকিবকে। আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন এর আগে পয়েন্টে  জীবন পাওয়া তামিম, শ্রীলঙ্কা সে উইকেট পেয়েছে রিভিউ নিয়ে। সাকিব অবশ্য বলের লাইনেই যেতে পারেননি, তার আগেই প্লাম্ব হয়েছেন। সাকিব রিভিউ নেননি। 

শুরুর সে চাপ সামাল দিতে সময় নিচ্ছিলেন মুশফিক, অফফর্মে থাকা লিটন অবশ্য ছিলেন অতি সতর্ক। তবে কাজে আসেনি সেসব। লাকশান সান্দাকানের অফস্টাম্পে বেরিয়ে যাওয়া বলে আলগা কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েছেন তিনি ৪২ বলে ২৫ রান করে। ২০১৯ সালের পর আবারও ওয়ানডে খেলতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন এসেছিলেন এরপর। তবে তিনিও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ফলে সব গিয়ে ঠেকেছিল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জুটির ওপরই।

আবারও দুজন বেশ কিছুক্ষণ টেনেছেন বাংলাদেশকে, টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থেমেছে তাদের জুটি। মাহমুদউল্লাহ বড় শট খেলে মুশফিককে সঙ্গ দিয়েছেন ভালই। তবে সান্দাকানকে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে কুসাল পেরেরার দারুণ উপস্থিত-বুদ্ধির শিকার হয়ে ধরা পড়েন ৪১ রান করে। 

১৬.৩ ওভার বাকি থাকতে মাঠে নামেন আফিফ হোসেন। সান্দাকানকে মিড-অন দিয়ে একটির পর চামিরাকে র‍্যাম্প শটে আরেকটি চারে শুরুটাও দারুণ হয়েছিল তার। কিন্তু উদানাকে মিড-অনের ইনফিল্ড ক্লিয়ার করে মারতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় সেটি হয়নি। আগের দিনই ওপরের দিকে ব্যাটিং করার ইচ্ছা প্রকাশ করা সাইফউদ্দিনের বদলে এরপর পাঠানো হয়েছিল মিরাজকে, তবে তিনি টিকেছেন মাত্র দুই বল- ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ক্ল্যাসিকাল স্পিনিং ডেলিভারিতে স্টাম্প হারিয়ে ফেরার আগে। 

এরপরই বৃষ্টির আঘাত। যাতে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় আধাঘন্টার মতো। এরপর হয়েছে ১৪ বল, এবার প্রায় ৩৬ মিনিট বিরতি দিতে হয়েছে তাতে। প্রথমদফা বৃষ্টির আগে ৮৪ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিক এবার গিয়েছিলেন ৯৬ রান পর্যন্ত। ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে আরেকবার বৃষ্টির মুখে পড়েছিলেন, তবে আম্পায়াররা খেলা বন্ধ করেননি। চামিরাকে ফ্লিক করে মারা চারে ১১৪ বলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেয়েছেন মুশফিক। 

চামিরার বাউন্সারে মাথায় আঘাত পাওয়া সাইফউদ্দিন এরপর কুসাল মেন্ডিসের ডিরেক্ট থ্রোয়ে হয়েছেন রান-আউট, আর শরিফুল উদানার বলে হয়েছেন এজড। মুশফিকও চামিরার বলেই ধরা পড়েছেন পয়েন্টে। তবে সেঞ্চুরির পর তার মারা চার চারে বাংলাদেশ এগিয়েছে আরেকটু। শেষ পর্যন্ত দলের মোট রানের ৫০.৮১ শতাংশ রান তিনি করেছেন একাই। বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ডটিও তারই, ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই এশিয়া কাপে দলের ৫৫.১৭ শতাংশ রান করেছিলেন তিনি। 

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন