আর্কাইভ থেকে দক্ষিণ আমেরিকা

ছয় লাখ কোটি ডলারের প্রথম বাজেট বাইডেনের

করোনাভাইরাসের কারণে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ছয় লাখ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নতুন এই পরিকল্পনায় মার্কিনীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে, বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করাই তাঁর লক্ষ্য। এ নিয়ে আশা ও তার সরকারের প্রতিশ্রুতির কথাও শোনান মার্কিনীদের।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর প্রথমবারের মতো ঘোষিত বার্ষিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় অসমতা বা বৈষম্য দূরীকরণের কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এজন্য রাখা হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি। এই বাজেট পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়তে নতুন করে সামাজিক অনুষ্ঠান ও বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে ধনীদের ওপর ট্যাক্স।

বাজেটে বিভিন্ন করপোরেশন, মূলধনী কোম্পানি ও শীর্ষ আয়কর থেকে সর্বনিম্ন তিন ট্রিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

 

ডেমোক্র্যাট দলের প্রতিনিধি ও প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, এই বাজেট সরাসরি মার্কিনীদের জন্য। এটি আমাদের জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যখাতের উন্নতি করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যেট প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, এই বাজেট পরিকল্পনায় ২০৩১ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের পরিমাণ জিডিপির ১১৭ শতাংশ বাড়বে। এই ব্যয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো সবচেয়ে বেশি হতে যাচ্ছে।

কোন খাতে কত ব্যয়

বাইডেনের বাজেটে পেন্টাগন ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের খরচ হিসেবে ব্যয় দেড় ট্রিলিয়ন ডলার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বাজেট প্রস্তাবে আগের ঘোষণা অনুযায়ী দুইটি করপোরেট পরিকল্পনা বলা হয়েছে। একটি কর্মসংস্থানের জন্য দুই দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ডলার ও পরিবার পরিকল্পনায় এক দশমিক আট ট্রিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউজ জানায়, মার্কিন অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে বাইডেনের এই বাজেট প্রস্তাব। এতে কয়েকটি খাতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা অন্যতম।

পরিকল্পিত বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পরিবেশবান্ধব জ্বালানির জন্য ৮০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে।

তিন ও চার বছরের শিশুদের প্রি-স্কুল প্রোগ্রামের জন্য ২০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় ধরা হয়েছে। ১০৯ বিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য।

মেডিক্যাল লিভ প্রোগ্রাম ও পরিবার পরিকল্পনায় ২২৫ বিলিয়ন ডলার।

সড়ক ও সেতুর জন্য ১১৫ বিলিয়ন ডলার। ১৬০ বিলিয়ন ডলার পাবলিক ট্রানজিট ও রেলওয়ের জন্য।

বাসাবাড়িতে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বাজেট পরিকল্পনাকে ভিন্নভাবে দেখছেন রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। একে অতিরিক্ত ব্যয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। অবশ্য ঘোষিত এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে হলে বাইডেনকে নিতে হবে কংগ্রেসের অনুমোদন। আগামী এক অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অর্থবছর।

ক্ষমতায় থাকার সময় প্রতিবছরই বাজেট ঘাটতি পূরণ করতে পেরেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দেওয়া সর্বোচ্চ বাজেট প্রস্তাব ছিল চার দশমিক আট ট্রিলিয়ন ডলারের।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন