মোড় ঘুরে বাংলাদেশের ৫০০ কি.মির মধ্যে ‘সিত্রাং’
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে। উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিয়ে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে । সুন্দবনের তিনকোনা ও সন্দীপের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকার প্রবেশ করছে এই ঝড়। এটি উপকূল অতিক্রমের সময় এর গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার হতে পারে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের বেশিরভাগ জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশের উপকূলের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে। তাই মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এর আগে, ঘূর্ণিঝড়টি মূলত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। এই পথে এগোলে এটি ভারতের ভুবনেশ্বর ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার কথা। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা এগিয়ে উত্তর-পূর্বে মোড় নিয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। উপকূলীয় ১৯টি জেলাতেই এর তাণ্ডব থাকতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোববার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ১৫ জেলায় ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের পূর্ভাবাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি রোববার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উপকূলের কাছে এসে সিত্রাং কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। উপকূল অতিক্রমের সময় এর গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার হতে পারে।