আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

কুবির প্রতিষ্ঠাকালীন ভিত্তিপ্রস্তর উধাও

অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নয়ন করতে গিয়ে ভেঙ্গে ফেলা প্রতিষ্ঠাকালীন ভিত্তিপ্রস্তর প্রায় চার বছরেও প্রতিস্থাপন করেনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসন।

২০১৯ সালে প্রধান ফটক থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয় ভিত্তিপ্রস্তরটি। সেসময় দ্রুতই ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানান প্রশাসন। কিন্তু চার বছরেও প্রশাসন কোন ধরণের পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক সংলগ্ন ভিত্তিপ্রস্তরটি ভাঙ্গা শুরু করে কর্মরত শ্রমিকরা। এবিষয়ে প্রতক্ষ্যদর্শী শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিরোধীতা করলে তৎকালীন প্রশাসন দাবি করেন অভ্যন্তরীণ রাস্তা সম্প্রসারণ এবং সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ভিত্তিপ্রস্তরটি ভাঙা হচ্ছে এবং পরবর্তীতে প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু চার বছরেও কোন ধরণের পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। তবে এতদিনেও কেন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি সে বিষয়ে জানেন না তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ১৬বছর পূর্বে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্বের পরিচয় বহন করে। অথচ উন্নয়নের নামে ভিত্তি প্রস্তরটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনঃনির্মাণের আশ্বাস দেয়া হলেও এখনো কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি, রেজিস্ট্রার ও ছাত্রলীগ যৌথভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম সংকলিত ভিত্তিপ্রস্তর ভেঙ্গে ফেলেছে। আমরা তাৎক্ষণিক ভিসির কাছে জানতে চাইলে উনি বলেন, ভিতরের রাস্তা প্রশস্ত করতে সাময়িকের জন্য ভিত্তিপ্রস্তরটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু ৩বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ভিত্তিপ্রস্তরটি প্রতিস্থাপন করা হয়নি। আমি উপাচার্য স্যারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভিত্তিপ্রস্তরটি প্রতিস্থাপন করার অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, এদেশে এখন একনায়কতন্ত্র চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একটা মুক্ত বুদ্ধি চর্চার  জায়গা। যেখানে প্রতিনিয়ত জ্ঞানের চর্চা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত এমন একটা জায়গায় প্রতিষ্ঠাতার (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া) নামসহ ভিত্তিপ্রস্তর ভেঙে ফেলা খুবই দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ যথাসময়ে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরটি পুনঃস্থাপন করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আমি জেনে নিই কি অবস্থা। আগে দায়িত্বে যারা ছিল তাদের কাছ থেকেও জানি। আমি প্রয়োজনে তৎকালীন রেজিস্ট্রারকে জিজ্ঞেস করি, উনারা কি বব্যস্থা নিয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশের ২৬তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভিত্তিপ্রস্তরটি স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। পরবর্তী ২৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন