ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি, গ্রেপ্তার দুই
সফিকুল নামে এক বাংলাদেশিকে ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি, নির্যাতনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংঘবদ্ধ মানব পাচার চক্রের দুই সদস্যকে করেছে ডিবি।
আজ মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ গ্রেপ্তারের ঘটানাটি জানান।
গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান বলেন, না জেনে, না বুঝে ইউরোপে যেতে উদগ্রীব তরুণ যুবকদের টার্গেট করে ফাঁদ পাতে দেশে ও লিবিয়ায় অবস্থানকারী চক্রের সদস্যরা। তাদের মাধ্যমে অনেককে অবৈধভাবে দুবাই থেকে নৌ, সড়ক পথ পাড়ি দিয়ে লিবিয়ায় নেওয়া হয়েছে। অনেকের মৃত্যুও হয়েছে।
ইউরোপে পাঠানোর নাম করে দুবাইয়ে নেওয়ার পর ডলার, পাসপোর্ট নিয়ে অবৈধ পথে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করা হচ্ছে বাংলাদেশিদের। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার চক্রের দুই সদস্য হলেন— বাদশা (৩১) এবং রাজিব মোল্লা (৩৫)।
হারুন বলেন,সারা দেশে অনেক থানাতেই মানব পাচারের অভিযোগে মামলা হচ্ছে। অনেক তরুণ-যুবক ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত চুক্তিতে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে অনিশ্চিত যাত্রা শুরু করে। তাদের অনেককে দুবাই নিয়েই জিম্মি করা হয়।
হারুন আরো বলেন, মোট ১৩ লাখ টাকার চুক্তিতে গত ৪ অক্টোবর ঢাকা থেকে দুবাই পাঠানো হয় পিরোজপুরের যুবক শফিকুলকে। সেখানে আরও ২০ বাংলাদেশির সঙ্গে একটি বাসায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে সিরিয়া হয়ে লিবিয়া বিমানবন্দরের পাশে একটি বাসায় বন্দি করা হয় মোট ৪২ জনকে। এরপর শুরু হয় অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। সেখানে চক্রের সদস্যদের নির্যাতনে ইউরোপে যেতে বিভোর বাংলাদেশিদের স্বপ্নভঙ্গ হয়। নির্যাতনের কথা পরিবারকে জানিয়ে টাকা আদায় করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, কারো কাছ থেকে ১০, ১২ ও ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়।
ভুক্তভোগী সফিকুল বলেন, ‘দুবাই যাওয়ার পরই বুঝতে পারি একা নই, আরও অনেক বাংলাদেশিকে তারা এখানে আনার পর জিম্মি করেছে। লিবিয়ায় নেওয়ার পর ভয়ানক নির্যাতন নেমে আসে। অথচ দেশে থাকতেই সাত লাখ টাকা দিয়েছিলাম। কথা ছিল ইতালিতে চাকরি হওয়ার পর বাকি পাঁচ লাখ টাকা নেবে। কিন্তু তারা ইতালি তো দূরের কথা লিবিয়ায় নিয়ে বন্দি করে, নির্যাতন করে টাকা আদায় করে।’