আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আলাদা এনআইডি অবকাঠামো তৈরির পরামর্শ

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, “সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে রাজনৈতিক সরকারের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ (এনআইডি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।”

সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এনআইডির দায়িত্ব না নিয়ে তারা নিজেরাই নতুন করে অবকাঠামো তৈরি করতে পারে। অন্যান্য দেশের উদাহরণ এ দেশে দিয়ে লাভ নাই। অন্যরা এটা করছে আমাদেরও করতে হবে বিষয়টি এরকম হওয়া উচিত না। কারণ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে হবে। ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হলে এনআইডির দায়িত্ব কমিশনের হাতে থাকা আবশ্যক।”

রোববার (৬ জুন) ‘সরকার কর্তৃক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার উদ্যোগ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল নাগরিক সংলাপ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার। সংলাপটি আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সভাপতিত্ব করেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

তিনি বলেন “রোহিঙ্গাদের ভোটার করার ক্ষেত্রে ইসির আগে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা দায়ী, বিভিন্ন তদন্তে তা উঠে এসেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যরা রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন দিতে সহায়তা করেছে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সরকারের কাছে এনআইডির দায়িত্ব গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”

আর সুশাষনের জন্য নাগরিক সুজন বলছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। ভোটার তালিকা প্রণয়ন নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০ অনুযায়ী জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের কাজটিও নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। যেহেতু জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন ভোটার তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোটদান জাতীয় পরিচয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রমটি নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকা যৌক্তিক ও অত্যাবশ্যক।

সংস্থাটি আরো মনে করে, কোনভাবেই জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত হওয়া উচিত নয়। সরকার কি উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, তা বোধগম্য নয় বলেও সংস্তাটি মন্তব্য করে।  

ভার্চুয়াল এ সংলাপে সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটি এম শামসুলহুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. হামিদা হোসেন, বিচারপতি এম এ মতিন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারসহ অনেকেই যোগ দেন।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে ঢাকাসহ সারাদেশেই প্রতিবাদ করছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন