এইচএসসির প্রশ্নপত্রে আনিসুল হককে হেয়, তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগের মধ্যেই আরেক প্রশ্নপত্র নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। যেখানে কথাসাহিত্যিক আনিসুল হককে হেয় করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
গেলো ৬ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা দ্বিতীয়পত্রে এ লেখক ও সাংবাদিককে অপমানজনক একটি সৃজনশীল প্রশ্ন রাখা হয়।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খান বলেন, ‘বাংলা প্রশ্নে কথাসাহিত্যিক আনিসুল হককে হেয় করার অভিযোগটি আমাদের নজরে এসেছে। বিজি প্রেস থেকে প্রশ্নের পাণ্ডুলিপি এনে প্রশ্ন প্রণেতা ও মডারেটরদের চিহ্নিত করা হবে। ইতোমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার থেকে কমিটি কাজ শুরু করবে।’
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন কলেজ পরিদর্শক প্রকৌশলী মো. খালেদ হোসেন ও উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ডিপ্লোমা) মোহাম্মদ শাহীন কাওছার সরকার।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির প্রধান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করা হবে’।
ওই সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপকে লেখক আনিসুল হকের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘বইমেলায় তাড়াহুড়ো করে বই প্রকাশ করেন তিনি। পাঠকদের কাছে তার লেখা খাপছাড়া মনে হয়। ফলে পাঠকদের কাছে তিনি সমাদৃত হন না। ’
সেই অনুচ্ছেদের নিচে ৫টি প্রশ্ন করা হয়েছে (ক) ‘যশ শব্দের অর্থ কী’? (খ) ‘লেখা ভালো হইলে সুনাম আপনি আসিবে। ’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। (গ) আনিসুল হক কোন কারণে ব্যর্থ, তা ‘বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন রচনার আলোকে ব্যাখ্যা কর। (ঘ) সাহিত্যের উন্নতিকল্পে ‘বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন’ রচনায় লেখকের পরামর্শ বিশ্লেষণ কর।’
প্রশ্নপত্রে এমন প্রশ্ন দেখে হতবিহ্বল অভিভাবকসহ দেশের সচেতন নাগরিকরা। একজন লেখককে এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ! তাও কিনা শেখানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের!
সৃজনশীল প্রশ্নের মাধ্যমে হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে! এ ধরনের প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের এড়িয়ে ছাপা হয় কী করে?
প্রশ্নপত্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এমন উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মাঝে।