ফারদিন হত্যায় গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে ৪ গ্যাংস্টার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪) হত্যার ঘটনায় ডেমরা-রূপগঞ্জসংলগ্ন চনপাড়ার চার গ্যাংস্টার গোয়েন্দাদের নজরদারিতে রয়েছে।
ফারদিন হত্যার রহস্যের গিঁট খুলতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চালাচ্ছে নানামুখী তৎপরতা। আলোচিত এ হত্যার ঘটনায় ডেমরা-রূপগঞ্জসংলগ্ন চনপাড়ার চার গ্যাংস্টার রয়েছেন গোয়েন্দাদের চোখে চোখে।
গোয়েন্দাদের ধারণা, এই চার গ্যাংস্টারের পাশাপাশি জড়িত থাকতে পারেন এক মাদক সম্রাজ্ঞী । তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে ধারাবাহিক অভিযানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
চার গ্যাংস্টার ও মাদক সম্রাজ্ঞী হলেন- রায়হান, নূর জামাল, মাল্টা রনি, মুজাহিদ এবং মনু।
ডিবির প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ফারদিনের হত্যার ঘটনায় এখনও কংক্রিট তথ্য পাওয়া যায়নি। কোনো কিছু এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সব বিষয়, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে বিশ্নেষণ করছি। তবে, ঢাকা শহরের কোনো এক জায়গায় ফারদিন খুন হতে পারেন। তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে সবকিছু বলতে পারছি না।
এদিকে ফারদিনের ছোট ভাই আব্দুল্লাহ বিন নূর তাজিম বলেন, ফারদিনের মাদকের সঙ্গে সংশ্নিষ্টতা তো দূরের কথা সে কখনও সিগারেট খায়নি। ফারদিন কেনো চনপাড়ায় গিয়েছিলেন, সেটা পুলিশ তদন্ত করে বের করুক। কেউ তাকে অপহরণও করতে পারে।
উল্লেখ্য, নিখোঁজের তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। সোমবার (৭ নভেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদীতে পরশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবেরও যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন তিনি। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফারদিন সবার বড়।
নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শেখ ফরহাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ময়নাতদন্তে আমরা দেখতে পেয়েছি, তার মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সেই আঘাত কোনো ধারালো অস্ত্রের নয়। আঘাতের চিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের চাহিদা ও অধিকতর তথ্যের জন্য তথ্য উপাত্ত ও আলামত মহাখালি ভিসিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে তাকে কীভাবে মারা হয়েছে।
ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা ৮ নভেম্বর বলেছিলেন, দেশের তিনটি শীর্ষ বিদ্যাপিঠে সুযোগ পাওয়ার পর সে বুয়েটে ভর্তি হয়। তবে আবাসিক হলের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সে হলে যেতে চায়নি। ফারদিন বাসায় থেকেই তার পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলে জড়িতদের দ্রুত সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।