আর্কাইভ থেকে অপরাধ

ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, গ্রেপ্তার ৪

ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানাধীন ১০নং কালা মৃধা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রেজাউল মাতুব্বরের (৩৮) নেতৃত্বে ১৭ বছর ধরে প্রতারণা চক্র নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল । সাধারণ গ্রাহকদের ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যম প্রতারণা করা অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকার ভাগ নেয়া ছিল তার প্রধান কাজ। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ২টি মাদক ও ৮টি প্রতারণা মামলার তথ্য পাওয়া যায়। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় গ্রেপ্তারের অভিযান সম্পর্কে আগাম তথ্য পেয়ে আত্মগোপনে চলে যেতেন তিনি।

সম্প্রতি রেজাউল মাতুব্বরসহ এই চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। রাজধানীর ডেমরা থানায় মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের (৪০) দায়ের করা মামলার জেরে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রোববার (১৩ নভেম্বর) ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

গত ১২ নভেম্বর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা মহানগরীর পান্থপথ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ তাদের গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৬টি মোবাইল ও ৩০টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- নাঈম হোসেন (২৫), দিদার মুন্সী (৪২) ও মো. জাহিদুল খান (২৪)।

তিনি জানান, আসামিদের মধ্যে দিদার মুন্সী চেয়ারম্যান মো. রেজাউল মাতুব্বরের বাল্যবন্ধু। গত ১০ বছর ধরে তিনি এই কার্ড প্রতারণা করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১টি পর্নোগ্রাফি ও ১টি প্রতারণার মামলার তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও আরেক আসামি নাঈম হোসেন iTel Hybrid Dialer অ্যাপস ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যাংক ও বিকাশ, নগদ, রকেটের হটলাইন নম্বর সদৃশ নাম্বার ব্যবহার করে নিজেকে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মোবাইলে কল কতেন। সুকৌশলে গ্রাহকদের OTP সংগ্রহ করে তাদের অ্যাকাউন্ট হতে টাকা হাতিয়ে নিতেন। গ্রেফতার অন্য আসামি মো. জাহিদুল খান চেয়ারম্যান মো. রেজাউল মাতুব্বরের আত্মীয় এবং চেয়ারম্যানের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে কাজ করতেন।

গ্রেপ্তারদের অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি জানান, আসামিরা নিজেদের সিঙ্গার, ওয়ালটন বা অন্য কোনো কোম্পানির হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কোম্পানিগুলোর শোরুমে ফোন করে ম্যানেজারকে চলতি মাসের ডেভিট/ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করেছে এমন গ্রাহকদের তথ্য আসামি/আসামিদের দেয়া হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে পাঠাতে বলতেন।

শোরুমের গ্রাহকদের ডেভিট/ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের তথ্য পাওয়ার পর গ্রাহকদের কাছে ফোন দিয়ে নিজেদের ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তাদের কার্ডের নিরাপত্তার কথা বলে তাদের মোবাইলে পাঠানো পিন কোডের ০৪ (চার) ডিজিট থেকে ০৬ (ছয়) ডিজিটের নাম্বার জানতে বলতেন। গ্রাহকরা সরল বিশ্বাসে প্রতারকদের ব্যাংকের কর্মকর্তা মনে করে তাদের দেওয়া নির্দেশনা মেনে পিনকোড পরিবর্তনের জন্য বর্তমান পিনসহ কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ও কার্ডের সিভিবি নম্বর দিয়ে দিতেন। আর এই নাম্বার ব্যবহার করে আসামিরা প্রতারণা করতেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন