আর্কাইভ থেকে অপরাধ

ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লব খুন হয়নি: পিবিআই

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুরন্ত বিপ্লব (৫১) খুন হননি। মর্নিং সান-৫ নামের একটি লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে তার মৃত্যু হয়েছে। জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাফিন মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, দুরন্ত বিপ্লব খুন হননি, লঞ্চের ধাক্কায় মারা গেছেন। পিবিআইয়ের ছায়া তদন্তে এমনটাই জানা গেছে।

নিহত দুরন্ত বিপ্লব নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলার ছোট ইলাশপুরের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যুর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে—মর্নিং সান-৫ নামে একটি লঞ্চের ধাক্কায় দুরন্ত বিপ্লব যে নৌকা করে নদী পাড় হচ্ছিলেন সেটি ডুবে যায়। আর নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনাতেই দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু হয়েছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ নভেম্বর কেরানীগঞ্জের নিজ খামার থেকে বের হয়ে বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে জিঞ্জিরা ফেরিঘাটে যান দুরন্ত বিপ্লব। এর মধ্যে ফেরিঘাট থেকে তিনি হেঁটে বটতলা ঘাটের দিকে আসেন। বটতলা ঘাট থেকে তার আগের পরিচিত মাঝি শামসুর (৬৫) নৌকায় ওঠেন। নৌকা করে দুরন্ত বিপ্লব সোয়ারীঘাট যাচ্ছিলেন। পরে বিকেল ৫টা ২৯ মিনিটে নৌকাটি বুড়িগঙ্গার নদীর দুই তৃতীয়াংশ আসলে মর্নিং সান-৫ নামের একটি লঞ্চ সেটিকে ধাক্কা দেয়। এই ধাক্কায় দুরন্ত বিল্পব নৌকা থেকে পরে গিয়ে পানিতে ডুবে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হন।

গেলো১২ নভেম্বর বুড়িগঙ্গার পানগাঁও এলাকায় দুরন্তের মরদেহ ভেসে ওঠে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খবর দিলে তার পরিবারের সদস্যরা গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।

নৌকা ডুবির পর মাঝি শামসু আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি শামসু মাঝিকে তার ফরিদপুরের বাড়ি থেকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শামসু নৌকা ডুবির কথা স্বীকার করেছেন। শামসুর দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে দুরন্তের একটি জুতা উদ্ধার করা হয়েছে। জুতাটি দুরন্তের বলে তার পরিবার নিশ্চিত করেছে।

এ ঘটনায় মর্নিং সান-৫ লঞ্চের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এদিকে পানিতে ডুবে দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু হয়েছে বলেও এখনো বিশ্বাস করছে না তার পরিবার। তার পরিবারের দাবি, দুরন্ত বিপ্লবকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, গেলো ৭ নভেম্বর কেরানীগঞ্জের নিজ খামার থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন বিপ্লব। এরপর থেকেই তার মোবাইল বন্ধ ছিল। ১২ নভেম্বর বুড়িগঙ্গার পানগাঁও এলাকায় এক অজ্ঞাত পরিচয়ের মরদেহ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে মরদেহটি দুরন্ত বিপ্লবের বলে শনাক্ত করেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন