জলবায়ু সম্মেলন: ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল গঠনে ঐক্যমত
উত্তর আফ্রিকার দেশ মিশরের শারম আল শাইখে জলবায়ু সম্মেলনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অর্থ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে একমত হয়েছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। মূলত এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা সম্মেলনের পরিধি আরও একদিন বাড়িয়ে দেয়।
রোববার (২০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো রোববার গভীর রাতে কপ-২৭ সম্মেলনে জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য একটি তহবিল গঠন করতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার বৈশ্বিক সংকল্পের রূপরেখার বিষয়ে বৃহত্তর চুক্তি অনুমোদনে বিলম্ব করেছে দেশগুলো।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, সারারাত ধরে চলা উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনার পর, মিশরীয় কপ-২৭ প্রেসিডেন্সি সামগ্রিক চুক্তির একটি খসড়া প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে এটিকে জাতিসংঘের শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত ও বিস্তৃত চুক্তি হিসাবে উপস্থাপন করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন আহ্বান করেছে।
রয়টার্স বলছে, রাতভর ওই অধিবেশনে ঝড় এবং বন্যার মতো জলবায়ু-জনিত দুর্যোগগুলোর তাৎক্ষণিক খরচ বহন করতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য একটি ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল গঠনের জন্য খসড়া বিধান অনুমোদন করা হয়েছে।
সংবাদমাধম ডয়চে ভেলে বলছে, ধনী ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল গঠন নিয়ে আলোচনা প্রত্যাশিত সময়ের চেয়েও দীর্ঘ হতে শুরু করে। গত ৯ নভেম্বর শুরু হওয়া জলবায়ু সম্মেলন ১৮ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। বরং ১৯ নভেম্বর বাড়তি দিনে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয় সম্মেলনে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে অংশ নেওয়া মালদ্বীপের পরিবেশমন্ত্রী আমিনাথ শোনা বলেন, ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল নিয়ে একটি ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে, সেটি আজকে ভোটাভুটিতে অনুমোদিত হতে হবে।
প্রসঙ্গত, মিশরের শারম আল শাইখের এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ১৯৮টি দেশের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বাংলাদেশ থেকেও সেখানে অনেকে অংশ নিয়েছেন।
রয়টার্স বলছে, ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের মতো একটি তহবিল গঠনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর যে দাবি রয়েছে তা গত দুই সপ্তাহের শীর্ষ সম্মেলনে প্রাধান্য পেয়েছে। আর এ কারণেই এই সম্মেলন শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আসলে এই আলোচনাকে আরও এগিয়ে দিয়েছে।
কপ-২৭ সম্মেলনে জন্য সামগ্রিক রাজনৈতিক চুক্তি গঠনকারী এই নথিটির মিশরে জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে প্রায় ২০০টি দেশের অনুমোদনের প্রয়োজন। পূর্বের পুনরাবৃত্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে খসড়াটিতে ‘সমস্ত জীবাশ্ম জ্বালানির’ ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার জন্য ভারত এবং অন্যান্য প্রতিনিধিদের অনুরোধের পরও এখানে কেবল কয়লার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
যেটিতে গত বছরের শীর্ষ সম্মেলনে সবাই সম্মত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিতে দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায় এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখার জন্য যা করা দরকার, তা করা হবে। তবে এই বিষয়ে কোনও অগ্রগতি হয়নি।