আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

রাষ্ট্র নিপীড়নকারী হলে আশ্রয়ের জায়গা থাকে না: মির্জা ফখরুল

‘বাংলাদেশের মানুষের দাঁড়ানোর কোথাও জায়গা নাই। কোথাও যে আশ্রয় নেবে, সে জায়গা নাই। আগে মানুষের আশ্রয়ের জায়গা ছিল আদালত, সেটাও এখন নেই। রাষ্ট্র যখন নিপীড়নকারী হয়ে যায়, তখন আর আশ্রয়ের কোনো জায়গা থাকে না।’ বললেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শুক্রবার (১১ জুন) সকালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যারা ক্ষমতা আছে, তারা দেশটাকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে। দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২৬ মার্চ (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) নরেন্দ্র মোদির সফরের দিন বাংলাদেশে যে ঘটেছে, সেটা ছিল পরিকল্পিত। আপনারা বলছেন ‘হেফাজতের তাণ্ডব’। আমি এ কথার সঙ্গে একমত নই। তাণ্ডব করেছে সরকার। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সরকার এ তাণ্ডব চালিয়েছে। যখন হেফাজতে (ইসলাম) ও বাম দলের লোকজন মোদির সফরের বিরোধীতা করে, তখন সরকারি দলের লোকেরা হেফাজতের লোকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাণ্ডব চালিয়ে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে ২০ জনকে হত্যা করেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকার আলেম-ওলামা এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা শুরু করেছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের নারী ও শিশু অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নিপুন রায়কে হেফাজতের ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার কথিত অভিযোগে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে। অথচ সেই রিমান্ড আর শেষ হয় না। তাকে পরিকল্পিতভাবে, সুচিন্তিতভাবে আটক করে রাখা হয়েছে। কারণ তারা বলতে চায়—‘তুমি (নিপুন রায়) একজন হিন্দু নারী, আমাদের (সরকারের) বিরুদ্ধে কথা বলো কেন?’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, নিপুন রায় চৌধুরী ও আসলাম চৌধুরীদের জেলে আটকে রেখেছে। কারণ একটাই—তাদের ক্ষমতায় থাকতে হবে। ম্যাডামকে কোন আইনে আটক রেখেছে? সতেরো বছরের সাজাপ্রাপ্ত, ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্তরা জামিনে আছে, অথচ ম্যাডামের সাজা পাঁচ বছরের জায়গায় ১০ বছর করেছে। তারপরও আমরা আশা নিয়ে বেঁচে আছি, বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছি—আমরা বিজয়ী হবই হব। আমরা লড়াই করছি, সে লড়াইয়ে বিজয়ী হব।’

মির্জা ফখরুল অবিলম্বে খালেদা জিয়া, নিপুন রায় চৌধুরী, আসলাম চৌধুরীসহ দলের ও বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে বলব—মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, মানুষকে বেঁচে থাকতে দিন। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। ফেরাউন, নমরুদ, হিটলার, মুসোলিনি—কেউ বাঁচতে পারেনি, এটা ইতিহাস।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ব্যাপারে চিকিৎসকদের বক্তব্য হলো—তিনি পোস্ট কোভিড পজিশন থেকে ভালো আছেন। তবে তাঁর হার্ট ও কিডনির সমস্যা আছে। এবং বাংলাদেশে এ সমস্যাগুলোর চিকিৎসা সম্ভব নয়। তাঁর (দেশের) বাইরে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বললেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে আদালতে। রাজনীতি থেকে শুরু করে সবকিছু হয়েছে আদালতে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ সবকিছুতে ক্ষতি হয়েছে আদালতে। আর সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি— ম্যাডামের প্রতি অবিচারটাও হয়েছে আদালতে। তাই আদালতে যেতে আস্থা কম পাই।’

শেখ সোহান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন