ডিএমপি'র প্রস্তাব মিরপুরে, বিএনপি চায় কমলাপুরে
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বৈঠকে সমাবেশের জন্য নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সঙ্গে নতুন করে কমলাপুর স্টেডিয়াম মাঠের নাম প্রস্তাব করেছে বিএনপি।
তবে ডিএমপির পক্ষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সঙ্গে নতুন করে মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। আজ রাতেই বিএনপি প্রতিনিধি দল বাঙলা কলেজ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম মাঠ পরিদর্শন করবে। রাতেই জানা যাবে কোথায় হবে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
এর আগে সন্ধ্যায় ৭টা ১০ মিনিটের দিকে বিএনপির প্রতিনিধি দল ডিএমপি সদর দপ্তরের প্রবেশ করে। প্রায় ২ ঘণ্টা বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বেরিয়ে আসেন তারা।
প্রতিনিধি দলে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ছাড়াও ছিলেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আমাদের প্রতিনিধি দল দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের বৈঠকে আমরা প্রথম দাবি করেছি বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশ করবো। তারা রাজি হননি। পার্টি অফিসে যেতে পারেন, কিন্তু সমাবেশ নয়। গতকালকের পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়েছে।
বুলু বলেন, আমরা বলেছি পল্টন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান না। তারা বলেছেন পল্টন না সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। পরে আমরা আরামবাগের কথা বলেছি। সেটাতেও রাজি হননি। সেন্ট্রাল গভর্মেন্ট স্কুলের প্রস্তাব দিলে রাজি হননি। তারা প্রস্তাব করেন মিরপুরের বাঙলা কলেজ মাঠ। আমরা সঙ্গে কমলাপুর স্টেডিয়াম মাঠের নাম প্রস্তাব করেছি। তারা বলেছেন, বিষয়টি তারাও ভেবে দেখবেন। যেটাই পছন্দ হয় সেটাই আমরা ঠিক করবো। ১০ তারিখ সমাবেশ ইনশাআল্লাহ হবেই।
তিনি বলেন, আমরা অনেকগুলো নামই প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু পল্টন, আরামবাগ বাদ গেল। বাকি থাকলো কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ। দুটোই আমরা রাতেই পরিদর্শন করবো। যেটা পছন্দ হয় রাতেই পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেব। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা সমাবেশ করবো না, এটা দলীয় সিদ্ধান্ত।
তাহলে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন?, এমন প্রশ্নের জবাবে বুলু বলেন, নয়াপল্টন তারা দেবে না, আর আমাদের স্ট্যান্ড সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাবো না। আমরা এখন মাঠ দুইটি পরিদর্শন শেষে স্থায়ী কমিটিকে জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা এখনই পরিদর্শনে যাবো।
গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বুলু বলেন, পুলিশ বলেছে আমরা কারও রিমান্ড চাইবো না। দুই নেতার জামিন ইতোমধ্যে হয়েছে।
সমাবেশ কোথায় সেই সিদ্ধান্ত কি তবে রাতেই হচ্ছে? এমন প্রশ্নে বিএনপি এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, হ্যাঁ রাতেই সিদ্ধান্ত হচ্ছে। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাচ্ছি না। দুই মাঠের যেটা পছন্দ সেখানেই হবে সিদ্ধান্ত। কতো লোক হবে সেটা সমাবেশেই দেখতে পাবেন।
এদিকে বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের বিষয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা নয়াপল্টনের কথাই বলেছি। সরকারকে এটাও বলেছি, আপনাদের কাছে যদি বিকল্প থাকে, সেটা যদি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে বিবেচনা করে দেখা হবে।
১০ ডিসেম্বর সমাবেশ, সরকারকে পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা অবশ্যই আমাদের সমাবেশস্থলে যাব। আর জনগণ কী করবে, সেটা তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।