আর্কাইভ থেকে অপরাধ

ল্যাংড়া হাছান ভারতে থাকে, ডাকাতি করে বাংলাদেশে

হাছান জমাদ্দার ওরফে ল্যাংড়া হাছান দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ডাকাতির সাথে জড়িত। মূলত সে ভারতে বসে সহযোগিদের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনা করতো। গত ১০ বছরে ৩০টির বেশি ডাকাতি করেছে ল্যাংড়া হাছানের দল। বললেন গোয়েন্দা প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় বোমা ফাটিয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় এই ল্যাংড়া হাছানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, পাঁচটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- মো. আরিফ (২৬), মো. আইনুল হক ওরফে ভোলা (৪২), মো. সাইফুল ইসলাম মন্টু (৪৫), মো. আনসার আলী (৫০), মো. শাহীন (৩৫)।

হারুন অর রশীদ বলেন, ২০১২ সালে সিলেটে ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে পা হারিয়ে নাম হয় ল্যাংড়া হাছান। কিন্তু এরপরও থেমে থাকেননি তিনি। ভারতে আশ্রয় নেন। আর অবৈধভাবে যাতায়াত করতে থাকেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত দিয়ে। চক্রের সদস্যদের নিয়ে ডাকাতি করে ভাগবাটোয়ারার পর ফিরে যেতেন ভারতে।

তিনি আরও বলেন, ল্যাংড়া হাছান ভারতে বসে সহযোগীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকান টার্গেট করত। এরপর ডাকাতির আগে তারা সেই দোকানের আশপাশে একটি বাসা ভাড়া নেয়। তারপর ডাকাত দলের সদস্যরা দোকানের আশপাশে রেকি করে প্রস্তুতি নিতো। সব কিছু ঠিক হলে হাছান ভারত থেকে এসে দলে যোগ দেয়। প্রথমে বোমা ফাটিয়ে ও গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ৬ থেকে ৭ মিনিটের মধ্যে দোকানের স্বর্ণালঙ্কার লুট করে আগে থেকে ঠিক করে রাখা গাড়িতে করে পালিয়ে যেতো।

ডিবি বলেন, এই চক্রটি ডাকাতির মালামাল কোথায় বিক্রি করে সেই তথ্য আমরা পেয়েছি। আপনারা জানেন পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারে কিছু চক্র রয়েছে যারা এই সকল মালামাল কিনে থাকেন। আমরা মালিক সমিতিকে অনুরোধ করবো এই সকল অসাধু চক্রকে প্রশ্রয় দেবেন না। তারা এসব মালামাল কেনার কারণেই এই সকল দুর্ধর্ষ চক্র ডাকাতি করছে। আমরা অনেকের নাম পেয়েছি। আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনবো।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, তার পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন থেকে ব্লক করে রাখা। তাই সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পালিয়ে যেত। একইভাবে আবার ফিরে আসতো। সে ২০০৮ সাল থেকে ডাকাতি করে আসছে। তার আশ্রয়দাতাদের বিষয় খোঁজ খবর নেয়া হবে। ভারতে সে কিভাবে নাগরিক হলো সে বিষয় আমরা লোক পাঠিয়ে খোঁজ করবো।

চক্রটি হাছানের নেতৃত্বে সারাদেশে ২৫ থেকে ৩০টি ডাকাতি করেছে। এই ডাকাতির মাধ্যমে হাজার হাজার ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়েছে।

এই চক্রটি সম্প্রতি কেরানীগঞ্জে ডাকাতি করার পরে ফেনীতে ডাকাতি করে। সেখানে ডাকাতির সময়ে একজনকে গুলিও করে তারা। সেই ব্যক্তি পরে মারা গেছেন। খিলগাঁও এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় রামপুরা থানায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন