চলতি বছরে পৃথিবীর পাশ কাটাবে ধুমকেতু
৫০,০০০ বছর পর প্রথমবারের মতো পৃথিবী ও সূর্যের পাশ দিয়ে উড়ে যাবে একটি ধূমকেতু। পৃথিবী থেকে খালি চোখেই এটিকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে এটি পৃথিবীর কাছ দিয়ে উড়ে যাবে। তবে পৃথিবী থেকে সবচেয়ে স্পষ্টভাবে এটিকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার দেয়া এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
মোটামুটি মানের দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে এটিকে দেখা তো যাবেই, এমনকি খালি চোখেও এটি দেখতে পাবেন মানুষ। তবে শহরের আলো আর চাঁদের আলোয় আকাশ বেশি উজ্জ্বল থাকলে ভিন্ন কথা।
পূর্ণচন্দ্রের কারণে ধূমকেতুটি দেখা কঠিন হতে পারে। তবে জানুয়ারির ২১-২২ তারিখে আকাশে নতুন চাঁদ থাকার ফলে দর্শকেরা ভালোভাবেই এটিকে দেখতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্যারিস অবজার্ভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস বাইভার।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ধূমকেতুটির ব্যাস প্রায় এক কিলোমিটার। সেদিক থেকে আগের ধূমকেতুগুলোর তুলনায় এটির আকার বেশ ছোট।
সি/২০২২ ই৩ (জেডটিএফ) নামক এ ধূমকেতুটি পৃথিবীর পাশ দিয়ে সর্বশেষ গিয়েছিল উচ্চ প্রস্তর যুগে (আপার প্যালিওলিথক)। তখন পৃথিবীর বাসিন্দা ছিল নিয়ানডারথালেরা। নাসা’র জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপও এটির ওপর নজর রাখবে।
সি/২০২২ ই৩ (জেডটিএফ) ধূমকেতুটি জুইকি ট্রান্সিয়েন্ট ফ্যাসিলিটি'র জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন।
এর আগে শেষবারের মতো ২০২০ সালের মার্চ মাসে নিওওয়াইজ ধূমকেতু পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখা গিয়েছিল। ১৯৯৭ সালে পৃথিবীকে পাশ কাটানো হেল-বপের ব্যাস ছিল ৬০ কিমি।
কিন্তু এবারের ধূমকেতুটি আগেরগুলোর তুলনায় পৃথিবীর কাছ দিয়ে যাবে।
ধারণা করা হচ্ছে, ধূমকেতুটির উৎপত্তি উর্ট ক্লাউড থেকে। উর্ট ক্লাউড হচ্ছে বরফের তৈরি বিভিন্ন রহস্যময় বস্তুতে পরিপূর্ণ আমাদের সৌরজগতের চারপাশকে কেন্দ্র করে থাকা একটি বিশাল আকৃতির তত্ত্বীয় বলয়।
বাইভার জানান, এবারের পর ধূমকেতুটির আমাদের সৌরজগতের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাসা'র জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপও এটির ওপর নজর রাখবে। তবে শক্তিশালী এ টেলিস্কোপ ধূমকেতুটির ছবি তুলবে না, বরং এটির উপাদানগুলো পর্যবেক্ষণ করবে।
বাইভার জানান, সি/২০২২ ই৩ (জেডটিএফ) বরফ ও ধুলি দিয়ে তৈরি এবং এটি থেকে সবুজাভ জ্যোতি নিঃসরিত হচ্ছে।