রিমান্ড শেষে কারাগারে ৬ জঙ্গি
জিহাদি সংগঠন আল-কায়েদার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে সশস্ত্র জিহাদ করার পরিকল্পনার অভিযোগে গ্রেপ্তার সৌদি প্রবাসী দলনেতা আব্দুর রবসহ চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাগারে যাওয়া অন্য তিন আসামি হলেন- সাকিব, শামীম হোসেন ও আবছার।
এছাড়া ঘটনার দায় স্বীকার করে আসামি নাদিম শেখ ও সাইদ উদ্দিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ রোববার (৮ জানুয়ারি) পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রবসহ চারজনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নরুল হুদা চৌধুরি তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন আসামি নাদিম ও সাইদ স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দিন আসামি নাদিম শেখ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম আসামি সাইদ উদ্দিনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গেলো সোমবার (২ জানুয়ারি) আসামিদের আদালতে হাজির করে যাত্রাবাড়ী থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরও আগে গেলো রোববার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে এই ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।
তদন্ত সংস্থা সিটিটিসির দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছেন তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনভিত্তিক অ্যাপসে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করে। পরে স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে জঙ্গিবাদের জন্য টেকনাফে হিজরত করে অবস্থান করছিলেন।
গেলো ২ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুর রব সমন্বয়ক হিসেবে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরিয়াহভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন ও জিহাদ বিষয়ে আলোচনা করতেন। পরে অনলাইনে বিদেশে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি সহযোগীর সঙ্গে তাদের পরিচয় হয় এবং অডিও-ভিডিও কলের মাধ্যমে তারা ভার্চুয়ালি যোগাযোগ স্থাপন করেন।
তিনি আরও বলেন, বিদেশে অবস্থানরত ওই ব্যক্তি সবাইকে হিজরত করে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর সেই সদস্য লিবিয়ায় অবস্থানরত আরও এক বাংলাদেশি এবং টেকনাফের স্থানীয় একজনের সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেন। সম্মিলিত আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়- আব্দুর রব, শামীম, সাকিব, নাদিম, সাইদসহ অন্য যারা হিজরতে রাজি তারা প্রথমে টেকনাফ গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে ট্রেনিং নেবেন। পরে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবেন।