আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মগবাজারে বিস্ফোরণ: ভবন ধসে যেতে পারে যেকোনো সময়

মগবাজারের ওয়্যারলেস গেটে বিকট শব্দে ঘটা বড় আকারের বিস্ফোরণের উৎসস্থলের ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এছাড়া উড়ে গেছে ভবনের নিচের অংশ। রাত সাড়ে ৯টার দিকে উদ্ধার অভিযানে নিয়োজিত থাকা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা এ আশঙ্কার কথা জানান। 

তিনি জানান, এটি এই মুহূর্তে চরম ঝুঁকিপূর্ণ একটি জায়গা। আমরা নিজেরাও ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছি। উৎসুক জনতা যারা আছেন তারা একটু দূরে অবস্থান নিলে ভালো হয়।

এই কর্মকর্তা আরও জানান, ওয়ারলেস গেটের কাছে যে ভবনটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেটির নিচতলা অনেকাংশে দেবে গেছে। এই ভবনে থাকা শরমা হাউজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এর নিচ তলায় বেঙ্গল মিটের একটি শোরুম ছিল। সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

বিস্ফোরণ কী কারণে হয়েছে, আপনাদের ধারণা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, এটি এখনো আমরা কোনোভাবেই ডিটেক্ট করতে পারছি না। তবে ধারণা করছি এটি গ্যাস জমে থাকার কারণে কোনো বিস্ফোরণ হতে পারে। তবে এটি এমন এক বিস্ফোরণ, আমরা এ যাবৎ এমনটা দেখিনি। বাংলাদেশে এটা আর কখনো হয়নি।
 
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই ভবনের নিচতলার অংশ উড়ে গেছে। ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব। এখন সবার আগে কাজ হচ্ছে হতাহতদের উদ্ধার করা। আহত ও নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।  

তিনি বলেন, এপর্যন্ত অনেকে ভেতরে আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমাদের ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট সেখানে কাজ করছে। আটকে পড়াদের উদ্ধারে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করা হচ্ছে। আমি স্পটে আছি। ভেতরের তথ্য আমরা পরে জানাতে পারব।  

প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৫০ জনের মতো মানুষ আহত হয়েছে। রাস্তায় যাত্রীবাহী বাসের অনেক যাত্রী আহত হয়েছে। বিস্ফোরণের সময় সড়কে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলন্ত অবস্থায় ছিল। পরিবহনের অনেকেই গ্লাস ভেঙে শরীরে পড়ায় আহত হয়েছেন। একজন শিশু নিহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মগবাজার ওয়্যারলেস গেটের কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তায় থাকা আল মক্কাসহ ২টি বাস ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাসের অনেক যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনায় মোট আহত ৫০ জনের বেশি। মারা গেছেন অন্তত ৬ জন। আহতদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট এবং আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ ও আহতদের মধ্যে ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

আহতদের মধ্যে ঢামেক হাসপাতালে ৪১ জনকে এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। 

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন