আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কঠোর লকডাউনে ঘর থেকে বের হলে যেসব শাস্তি পেতে হবে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে শুরু হচ্ছে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এ বিধিনিষেধ চলাকালে জরুরি কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে।

লকডাউন বা কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ২০১৮ সালের সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন প্রয়োগ করতে পারে।

‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ১৬ (গ) ধারার বাধা-নিষেধ অনুযায়ী কোনো স্থানে জন সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ বা সীমিত করণ করে বা ১৪৪ ধারা জারি করে জনবিচ্ছিন্ন করতে পারে। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘আইসোলেশন’, ‘কোয়ারেন্টাইন’ ও ‘লকডাউন’ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে এই আইন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।’

‘আইনের ১১ (২) ধারায় বলা হয়েছে, (২) মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সংক্রামক রোগ সীমিত বা নির্মূল করা সম্ভব নহে, তাহা হইলে তিনি সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা সংক্রমিত স্থানে অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ, সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন।’

সুতরাং এ ধারা অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী কোনো এলাকা লকডাউন ঘোষণা করতে পারেন। ১৬ (ক) ধারা অনুযায়ী সন্দেহজনক স্থান জীবাণুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট স্থানে জনসাধারণের প্রবেশ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিতকরণও করা যায়।

কোনো ব্যক্তি যদি লকডাউন না মেনে সংক্রমণ ছড়ায় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের জেল দিতে পারবে। এছাড়া আইনের ২৫(৩) ধারা অনুযায়ী, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে কোনো ব্যক্তি যদি দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান করেন বা নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন তাহলে তাকে তিন মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারেন।

সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন-২০১৮ এর ২৪(২) ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রমণ জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটাতে সহায়তা করেন তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৯ জুন) সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে আগামী ১ জুলাই ভোর ৬টা থেকে সারাদেশে সাত দিনের জন্য জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচল এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা বন্ধের বিষয়ে সরকার বিধিনিষেধ ও নিষেধাজ্ঞা পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’ এ সময় জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী কর্মকর্তারা ছাড়া ও জরুরি কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

মুক্তা মাহমুদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন