আর্কাইভ থেকে দক্ষিণ আমেরিকা

রেকর্ড ভাঙা গরমে পুড়ছে মার্কিনী ও ক্যানাডীয়রা

রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রায় তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। কানাডার মেরু অঞ্চল, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে শুরু করে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন, ওয়াশিংটন অবধি। ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে কানাডায়। গরমে দেশ দুটিতে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুল, করোনার টিকাকেন্দ্র, অলিম্পিকের বাছাই ক্যাম্প।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, স্থানীয় আবহাওয়াবিদরা বলছে, সপ্তাহজুড়ে এমন দাবদাহ বয়ে যেতে পারে। এ কারণে তাপমাত্রা বর্তমানের তুলনায় আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর তীরবর্তী অরিগন অঙ্গরাজ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে দাবদাহ। স্মরণকালের সর্বোচ্চ গরমে নাকাল অরিগনবাসী। অঙ্গরাজ্যটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। প্রচন্ড দাবদাহে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। গরমে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুল ও করোনার টিকাকেন্দ্রগুলো। রাস্তায় গাড়ি কম। বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন শপিংমল, রেস্তোরাঁও।

এদিকে, তীব্র তাপদাহে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অঙ্গরাজ্যে শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ১৩০ জনের হঠাৎ মৃত্যু হয়েছে। দেশটির পুলিশ জানিয়েঝে, এদের বেশিরভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। কানাডার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দক্ষিণভাগজুড়ে রেকর্ড মাত্রায় দাবদাহ চলছে।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অ্যালবার্টা, মেনিটোবা, নর্থওয়েস্ট টেরিটোরিসহ কানাডার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সপ্তাহজুড়ে ভয়াবহ দাবদাহ বয়ে যাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে এনভায়রনমেন্ট কানাডা। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় এলাকায় রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রার সতর্কতা জারি করেছে এনডব্লিউএস। পুরো অঞ্চলে হিট ডোম তৈরি হয়েছে। যা দেশটির মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

এনভায়রনমেন্ট কানাডার জ্যেষ্ঠ জলবায়ুবিদ ডেভিড ফিলিপস বলেছেন, ২০১৮ সালে কানাডায় এ রকম তীব্র গরমে প্রায় ৭০ জন মারা গিয়েছিল। এবার উষ্ণ আবহাওয়া সপ্তাহজুড়ে থাকতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশিও হতে পারে।

অথচ তুমুল তুষারপাতের সঙ্গে পরিচিত এসব এলাকার মানুষ। তীব্র গরমে অভ্যস্ত নয় তারা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন মেরু এলাকাগুলোতেও রেকর্ডভাঙা গরম দেখা যাচ্ছে। ফিলিপস বলেন, মরুভূমির মতো গরম পড়ছে। বিশ্বের দ্বিতীয় শীতলতম ও তুষারপাতপ্রবণ দেশ কানাডা। আমরা তুষারঝড়ের সঙ্গে পরিচিত, এমন তীব্র গরমের সঙ্গে অভ্যস্ত নই। আমাদের এখানকার চেয়ে এখন দুবাইয়ে তুলনামূলক কম গরম পড়ছে।

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ফ্যান ও বহনযোগ্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কিনতে দোকানে ভিড় করছে কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত এলাকার মানুষ। ওই এলাকার কয়েকটি স্কুল ও করোনার টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে গরম থেকে স্বস্তি দিতে সড়কের পাশে কৃত্রিম ফোয়ারা বসিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যেসব বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই, তাদের অনেকেই গাড়িতে বা বাড়ির বাইরে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছে।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন