আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ভারতে একটি গাছে ১২১ প্রজাতির আম!

এক বার ভাবুন, একই গাছের একটি ডালে ল্যাংরা ঝুলছে, সেই গাছেরই অন্য ডালে ঝুলে রয়েছে আম্রপালি। আম্রপালি থেকে চোখ সরতেই দেখতে পাবেন পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে ফজলি!

হ্যাঁ। এক নয়, দুই নয়, একেবারে ১২১! ঠিকই পড়ছেন একটি আম গাছ থেকে ১২১ প্রজাতির আম পাওয়া যাচ্ছে। এমন জাদু গাছের খবর ছড়িয়ে পড়তেই পর্যটকের ঢল নেমেছে আমবাগানে।

আমপ্রেমীরা তো বটেই, আমের প্রতি যাদের ততটা ভালবাসা নেই তারাও ছুটছেন সামনে থেকে এমন গাছকে চাক্ষুষ করার জন্য।

বিরল এই দৃশ্য দেখতে হলে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে যেতে হবে। সাহারানপুর জেলার কোম্পানি বাগ অঞ্চলে রয়েছে হর্টিকালচার অ্যান্ড স্টাডিং হার্ট। সেখানে গাছ নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা হয়। সম্প্রতি ওই গবেষণা কেন্দ্রেই একটি গাছে ১২১ প্রজাতির আম ফলেছে।

কী কী আম আছে ওই গাছে?

ল্যাংরা, চৌসা, দশেরি, রামকেলা, আম্রপলি, সাহারানপুর গৌরব, সাহারানপুর সৌরভ, সাহারানপুর অরুণ, সাহারানপুর বরুণ, সাহারানপুর রাজীবের মতো আম তো রয়েছেই। এছাড়া লখনউ সফেদা, টমি অ্যাট কিংস, পুসা সৌর, সেনসেশন, রাতাউল, কলমি মালদা ম্যাঙ্গো, বোম্বে, স্মিথ, ম্যাগনিফেরা জালোনি, গোলা বুলন্দশহর, লারাঙ্কু, এলআর স্পেশাল, আলামপুর বেনিশা, আসোজিয়া দেওব্যান্ডের মতো আমও ফলেছে ওই গাছে।

কী ভাবে সম্ভব হল এই ফলন?

গ্রাফ্টিংয়ের দ্বারা সম্ভব হয়েছে সবটাই। বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছের ডাল ওই গাছটির ডালের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে সেগুলো থেকেই আলাদা প্রজাতির আম ফলেছে।

তবে শুনতে যতটা সহজ লাগছে বিষয়টি তত সহজ ছিল না। গাছের ক্ষেত্রে গ্রাফ্টিং খুবই সাধারণ প্রক্রিয়া। এর জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন হয় না। সামান্য কিছু শিক্ষা থাকলেই নিজের বাড়িতে যে কোন দুটি আলাদা গাছের ডালের মধ্যে গ্রাফ্টিং করা যায়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাফল্যও মেলে। কিন্তু একটি গাছে এতগুলো আলাদা প্রজাতির গাছের ডাল জোড়া লাগানো মোটেই সহজ ছিল না। গবেষণার ফল পেতে গবেষকদের ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।

গবেষণা এখনও চলছে। কী ভাবে আরও উন্নত প্রজাতির আম পাওয়া যায় তার চেষ্টাই করছে গবেষকরা।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন