ইবিতে ফি প্রদানে ভর্তিচ্ছুদের ভোগান্তি, অটোমেশনের দাবি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যলয়ের (ইবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির প্রথম বর্ষে ভর্তি শুরু হয়েছে। এতে ভর্তি ও আনুষঙ্গিক ফি প্রদান করতে এসে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভর্তিচ্ছুদের। ফি জমাদানের জন্য ব্যাংকে একটি মাত্র কক্ষ হওয়ায় সেখানে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ব্যাংকে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে টাকা জমা দিচ্ছে তারা। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগেও সেকেলে পদ্ধতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলেই অটোমেশন করা সম্ভব বলে জানিয়েছে আইসিটি সেল।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে এসে বিভাগ থেকে রসিদ নিয়েই বিশ্ববিদ্যলয়ের ব্যাংকে এসে বিভিন্ন খাতে টাকা জমা দিচ্ছেন ভর্তিচ্ছুরা। সকালে ব্যাংক খোলার সাথে সাথেই ভর্তিচ্ছুরা ব্যাংকে ভীড় করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মাত্র ব্যাংক ও মাত্র একটিই কক্ষ হওয়ায় এই ভোগান্তিতে পড়ছে তারা। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানালা দিয়ে আলাদাভাবে দুইদিকে টাকা নিচ্ছেন। তিনদিকে টাকা জমা নিয়েও ব্যাংক কর্মকর্তারা সামলাতে পারছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে চুয়েট, জগন্নাথ, খুলনা, বেগম রোকেয়াসহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অলনাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ভর্তি ফি গ্রহণ করছে। তবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যলয় এখনো সনাতন পদ্ধতি থেকে বের হতে পারেনি। শুধু এ বছরই নয়। সনাতন এ প্রক্রিয়ায় প্রতিবছরই ভোগান্তি পোহান ভর্তিচ্ছুরা। বেশি ভোগান্তিতে পড়ের দূর-দুরান্ত থেকে আসা ভর্তিচ্ছুরা। এছাড়া নিয়মিত ফি দিতে এসেও ভোগান্তিতে পড়েন বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ফি প্রদান প্রক্রিয়া অর্থাৎ অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুকরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি দীর্ঘদিনের। এটি এখন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবিতে রূপ নিয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগেও সেকেলে পদ্ধতিতে ফি দিতে হয়। এতে ক্ষুদ্ধ বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীরা।
একাউন্টিং এন্ড ইনফেরমেশন সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হতে আসা তানজিল বলেন, প্রযুক্তির যুগে এসে ব্যাংকে লম্বা লাইনেই দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। টাকা দিতে গিয়ে অনেক সময় চলে গেছে। তাই সারাদিন ঘুরেও ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারিনি। অনেক বিশ্ববিদ্যলয়ে অনলাইনে ভর্তি ফি নিচ্ছে। ইবিতেও অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা পরিশোধের পদ্ধতি চালু করলে এই ভোগান্তি থেকে আমরা রক্ষা পেতাম।
বিশ্ববিদ্যলয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিহাব উদ্দিন বলেন, প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে এসে আমাদের বিশ্ববিদ্যলয়ে এখনো সনাতন পদ্ধতিতে ফি দিতে হয়। আমাদের অনেক পরে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু করেছে। আমাদের এখানে এই প্রক্রিয়া চালু করতে আর কত সময় নেবে?
আরও পড়ুনঃ ইবিতে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষরের মূল্য ১০০ টাকা!
আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, প্রাথমিক টাকা আমরা অনলাইনে নিয়েছি, বাকি টাকাও নেওয়া সম্ভব হতো। টাকার খাতগুলো আলাদা আলাদা হওয়ার কারণে সমস্যাটা তৈরি হয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকে অনলাইন ট্রানজেকশন শুরু করলে সহজ হয়ে যাবে। অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং যুক্ত করলে আলাদা চার্জ দিতে হয়। তবে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিলেই অনলাইন প্রক্রিয়া চালু করা সম্ভব।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ব্যাংকে টাকা দিতে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আসলেই কষ্টকর। আমি নিজেও গিয়ে একদিন লম্বা লাইন দেখেছিলাম। তাছাড়া ব্যাংকের স্পেসটা কম হওয়ার কারণে বেশি সমস্যা হয়। ভর্তি প্রক্রিয়ার ফি গ্রহণ প্রক্রিয়া আগামী বছর অনলাইনে করার পরিকল্পনা আছে।