আর্কাইভ থেকে আফ্রিকা

হাইতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, সন্দেহভাজন চারজনকে হত্যা

হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইজকে বাসভবনে গুলি করে হত্যার পর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ক্লড জোসেফ। সন্দেহজনক চারজনকে হত্যা করেছে পুলিশ। হামলায় আহত হয়েছেন হাইতির ফার্স্ট লেডি এবং তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে হাইতির পুলিশ প্রধান লিওন চার্লস জানান, প্রেসিডেন্টের ওপর হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছে। আটক হয়েছে দুইজন। তারা এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো জড়িতদের হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।

পুলিশ প্রধান আরো বলেছেন, তিনজন পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করা হয়েছিল। তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব রুট বন্ধ করে দিয়েছি। তারপর থেকেই তাদের সঙ্গে আমাদের গুলি বিনিময় হচ্ছিল। ঘাতকদের হত্যা অথবা আটক করতে হবে। রাজধানী পোর্ট অ-প্রিন্সে ঘাতক গ্রুপের অন্যরা লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে প্রেসিডেন্টকে হত্যার পর দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের হাইতির প্রধানমন্ত্রী ক্লড জোসেফ। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তিনি। এর অধীনে বড় কোনো সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনা ও পুলিশ।

প্রধানমন্ত্রী জোসেফের উদ্ধতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ফরেন ইলিমেন্ট নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে। এই হামলা অমানবিক ও বর্বরোচিত বলে মন্তব্য করেছেন ক্লড জোসেফ।

হাইতির প্রেসিডেন্টের হত্যাকান্ডকে ভয়াবহ এক হত্যাকান্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ ল্যাটিন অ্যামেরিকার নেতারা।

বুধবার ভোরে নিজের বাসভবনে হাইতির প্রেসিডেন্ট মোইজ ও তার স্ত্রী ও ফার্স্টলেডি মার্টিন মোইজকে গুলি করে অজ্ঞাত অস্ত্রধারীরা। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন প্রেসিডেন্ট। আহত হন ফার্স্টলেডি মার্টিন। তাকে দ্রুত আকাশপথে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।

২০১৭ সালে হাইতির প্রেসিডেন্ট হন জোভেনাল মোইজ। সাম্প্রতিক সময়ে তার পদত্যাগ দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। দশকের পর দশক ধরে দেশটিকে ঘিরে ধরেছে অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ব্যাপক সংঘবদ্ধ সহিংসতা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এর ফলে ওই অঞ্চলে সবচেয়ে গরিব দেশে পরিণত হয়েছে হাইতি।

প্রেসিডেন্ট জোভেনাল মোইজের ঘাতকরা ছিল বিদেশি। তারা ইংরেজি এবং স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেছে। হাইতির সরকারি ভাষা হলো ক্রেওলি এবং ফ্রেঞ্চ। কেউ কেউ বলেছে, কালো পোশাকে ছিল হামলাকারীরা। তাদের হাতে উচ্চ শক্তিসম্পন্ন অস্ত্র ছিল।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন