আর্কাইভ থেকে দক্ষিণ আমেরিকা

যুক্তরাষ্ট্রে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি! তীব্র গরমে মৃত্যু ২০০

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তীব্র গরম শুরু হয়েছে। একদিকে নতুন করে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত, অন্যদিকে তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন! ওয়াশিংটন ও ওরেগনের কয়েকটি স্থানে তাপমাত্রা পেরিয়ে গেছে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরই জেরে মাত্র এক সপ্তাহে মারা গেছে শ' দুয়েক মানুষ। আগামী সপ্তাহে দেশটির পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে চরম আবহাওয়ার কবলে পড়বে তিন কোটির বেশি মানুষ।

মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানায়, হিট ডোমের জেরে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রবল দাবদাহে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্র। তথ্য বলছে, ইতিমধ্যে ওরেগনে মারা গেছে ১১৬ জন আর ওয়াশিংটনে সংখ্যাটা ৭৮। ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদাসহ বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভাঙতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার কয়েকটি এলাকায় ৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।

শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রোববারেও একই ধরনের তাপমাত্রা থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর আগে ১৯১৩ সালে ডেথ ভ্যালিতে সর্বোচ্চ ৫৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এর আগে লাস ভেগাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। এবার ভঙ্গ হতে পারে সেই রেকর্ড।

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমের অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারী নাগরিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে। তাপপ্রবাহজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে লাখ লাখ অ্যামেরিকান। এ সময় নাগরিকদের বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই সময়ে প্রচুর পানি পান এবং শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ভবনে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে দাবানলের কারণে নেভাদা ও ওরেগনের কয়েকটি এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

গেল জুন থেকে তীব্র গরম চলছে উত্তর অ্যামেরিকার দেশগুলোতে। অ্যামেরিকাবাসীর শরীর এই তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলে ভবিষ্যতে আরও খারাপ দিন আসতে চলেছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন স্বাস্থ্য দপ্তর। তাদের বক্তব্য, জলবায়ু পরিবর্তন যে হচ্ছেই তার জলজ্যান্ত উদাহরণ আবহাওয়ার এই নাটকীয় বদল! কখনও ভয়াবহ বন্যা, কোথাও বিধ্বংসী দাবানল তো কখনও প্রচন্ড তাপপ্রবাহ। এবার এমন আবহাওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

তবে, শুধু যে মানুষ মারা যাচ্ছে তা নয়। বিপন্ন হচ্ছে সামুদ্রিক প্রাণীও। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার গবেষকরা জানিয়েছে, গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে কানাডায় যে তাপপ্রবাহ চলছে তার জেরে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে মারা গেছে কমপক্ষে একশো কোটি সামুদ্রিক প্রাণী!

ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন বায়োলজিস্ট ক্রিস্টোফার হার্ল জানান, একশো কোটির হিসেবটাও বোধহয় কম! ভ্যাঙ্কুভারে সমুদ্রতট দিয়ে একবার হেঁটে গেলে বিপর্যয়ের আঁচ মিলবে। সেখানে চারদিকে শুধু সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ!

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন