আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ফকির আলমগীরকে নেওয়া হবে শহীদ মিনারে

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরকে নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

শনিবার (২৪ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে তার মরদেহ সেখানে নেওয়া হবে।

তার ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব জানান, দুপুর ১টা পর্যন্ত মরদেহ রাখা হবে শহীদ মিনারে। তার আগে বেলা ১১টার দিকে খিলগাঁও পল্লীমা সংসদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে বাদ যোহর খিলগাঁও মাটির মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা হবে। পরে খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

টানা আট দিন করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ফকির আলমগীর। রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে রেখে গেছেন।

গত ১৪ জুলাই ফকির আলমগীরের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর হাসপাতালের আইসিইউ এবং শেষ পর্যন্ত লাইফ সাপোর্টে পর্যন্ত রাখা হয়েছিল।

ফকির আলমগীরের ফুসফুসের বেশিরভাগ অংশেই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া তার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল।

ফকির আলমগীরের জন্ম ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে। কালামৃধা হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। জগন্নাথ কলেজ (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন গুণী এই ব্যক্তি।

১৯৬৬ সালে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন ফকির আলমগীর। সেই সূত্রেই গণসংগীতে আসা। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে তিনি ষাটের দশক থেকেই সরব হয়ে ওঠেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব বড় আন্দোলন হয়েছিল, সেগুলোতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন ফকির। তার কণ্ঠ বজ্র হয়ে বেজেছিল আন্দোলনের মিছিলে।

এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে ফকির আলমগীর যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। কণ্ঠসৈনিক হিসেবে তিনি স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের মনে ছড়িয়ে দেন বিজয়ের স্পৃহা, জুগিয়েছেন সাহস।

মুক্তা মাহমুদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন