শামীমা নাসরিন ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:১২
ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্র আর সমর্থন করবে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রথম বক্তৃতায় একথা জানান তিনি। বাইডেন বলেন, সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজা হবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ও জার্মানির ডয়চে ভেলে জানায়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার প্রথম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পা রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানালেন তিনি। বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ফিরে এসেছে, কূটনীতিও ফিরে এসেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ছয় বছরের ইয়েমেন যুদ্ধে মানবিক ধ্বংসযজ্ঞের করুণ চিত্র তৈরি হয়েছে। চলমান সংঘাত পুরোপুরি বন্ধে দেশটিতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা জানান তিনি। বলেন, ইয়েমেনে সৌদি আরব যে লড়াই চালাচ্ছে তাতে আর সাহায্য করবে না যুক্তরাষ্ট্র। বরং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে কীভাবে মীমাংসার পথ বের করা যায় তার চেষ্টা করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধে সমর্থন বন্ধের বিষয়ে প্রথম বিবৃতি দেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। পরে নিজেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান বাইডেন। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনোভাবেই আর সৌদি আরবকে যুদ্ধে মদদ দেওয়া হবে না। বরং ইয়েমেনে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজা হবে। এর ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হবে না। যুক্তরাষ্ট্র শুধু যুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবে।
ইয়েমেনে ২০১৪ সালে আক্রমণ শুরু করে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। পরের বছর ওবামা সরকারের সবুজ সংকেত পেয়েই বিদ্রোহীদের হটাতে এ অভিযান শুরু করে সৌদি আরব। ক্রমেই ইয়েমেনের দখল নিতে শুরু করে তারা। কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে সৌদি আরবসহ একাধিক মুসলিম দেশ। তাদের সাহায্য করে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা দেশগুলো।
ব্রিটেনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, যুদ্ধে ইতি টানতে মার্কিন সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দিলেও ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের আল-কায়েদাবিরোধী ও জঙ্গি দমন অভিযানে কোনো প্রভাব পড়বে না জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। একইসঙ্গে ইরানের কারণে সৌদি আরবের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তায় হুমকি মোকাবেলায় সহযোগিতাও করবে ওয়াশিংটন। এ আশ্বাসে সন্তোষ জানিয়েছে রিয়াদ।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ইয়েমেনে ছয় বছরে এক লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে আট মিলিয়ন ইয়েমেনি। যুদ্ধে দেশটিতে তীব্র অনাহার ও দারিদ্র্য দেখা দিয়েছে। বর্তমানে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি ইয়েমেন। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ আলোচনা একমাত্র পথ বলছেন বাইডেন।
প্রবীণ কূটনীতিক টিম লেন্ডারকিংকে ইয়েমেন বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এসএন